বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ নাজাতের কালেমা

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হলো নাজাতের কালেমা। বোখারি শরিফের হাদিসে বলা হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে তার ওপর জাহান্নাম হারাম হবে।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের সময় সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এত বেশি শোকাহত হয়ে পড়েছিলেন যে অনেকেই বিভিন্ন প্রকার ওসওয়াসায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। হজরত ওসমান (রা.) বলেন, আমিও সেই ওসওয়াসায় লিপ্ত লোকদের মধ্যে ছিলাম। হজরত উমর (রা.) আমার কাছে এসে সালাম করলেন; কিন্তু আমি মোটেও উপলব্ধি করতে পারিনি। তিনি হজরত আবু বকর (রা.)-এর কাছে অভিযোগ করলেন, (যে, ওসমান (রা.)-কে অসন্তুষ্ট মনে হচ্ছে। কেননা আমি তাকে সালাম করেছি, তিনি সালামের উত্তর পর্যন্ত দেননি) অতঃপর তারা দুজনই আমার কাছে তশরিফ আনলেন এবং সালাম করলেন। হজরত আবু বকর (রা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে তুমি তোমার ভাই উমরের সালামের জবাব দিলে না (এর কারণ কী)? আমি আরজ করলাম, কই আমি তো এরূপ করিনি। হজরত উমর (রা.) বললেন, নিশ্চয় করেছেন। আমি বললাম, আপনি কখন এসেছেন বা সালাম করেছেন, তা আমি মোটেও উপলব্ধি করতে পারিনি। হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, ঠিক আছে এমনই হয়ে থাকবে; আপনি হয়তো কোনো গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিলেন। আমি বললাম-জি, হ্যাঁ। আমি গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিলাম। হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, তা কী ছিল? আমি আরজ করলাম, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল হয়ে গেল অথচ এই কাজের নাজাত কিসের মধ্যে সেই কথা তাকে জিজ্ঞাসা করে রাখতে পারিনি। হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, আমি জিজ্ঞাসা করে রেখেছি। এই কথা শুনে আমি উঠে দাঁড়ালাম এবং বললাম, আপনার ওপর আমার মা-বাপ কোরবান হোন, এই কথা জিজ্ঞেস করার আপনিই উপযুক্ত ব্যক্তি ছিলেন (কেননা, আপনি দীনের প্রতিটি কাজে অগ্রগামী)। হজরত আবু বকর (রা.) বললেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই কাজের নাজাত কিসে পাওয়া যাবে? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইলেন, যেই ব্যক্তি ওই কালেমাকে গ্রহণ করবে, যা আমি আপন চাচা (আবু তালেবের ওপর তার মৃত্যুর সময়ে) পেশ করেছিলাম, আর তিনি না করে দিয়েছিলেন তা-ই একমাত্র নাজাতের কালেমা।

(মুসনাদে আহমদ, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, মুসনাদে আবী ইযালা)

নাজাতের কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু শুধু মুখে স্বীকার করা নয় অন্তরেও ধারণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ কালেমাকে বুকে ধারণ করার তাওফিক দান করুন।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর