রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক চাপ

মিয়ানমারকে সোজা পথে আনতে পারে

রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফরের পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর বাংলাদেশের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন বাড়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক দিক হলো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন। এশিয়ার এ অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপে মালদ্বীপ, উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে অভিন্ন অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ছয় লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার দুর্দশা নিয়েও কথা বলেছেন। একই সময়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাদের রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রমাণ্যচিত্র প্রকাশ পেয়েছে। হতভাগ্য ১০ রোহিঙ্গা পুরুষকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যার পর কবরচাপা দেওয়া হয়। যখন কবরচাপা দেওয়া হচ্ছিল তখন তাদের কারও কারোর গোঙানির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিচার ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। স্মর্তব্য, বাংলাদেশ সফরের পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড সফর করবেন। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি রাখাইন রাজ্য সফরেও যাবেন। বাংলাদেশ সফরের আগে তিনি রোহিঙ্গা দুর্দশাকে মনুষ্যসৃষ্ট ট্র্যাজেডি বলে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, সঠিক রাজনৈতিক ইচ্ছা, সহনশীলতা এবং সম্পৃক্ত সবার সহযোগিতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে। এশিয়া সফরের প্রাক্কালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দফতর থেকে প্রকাশিত ভিডিও ক্লিপের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে— রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ব্রিটেন যে মানবিক এ সমস্যার সমাধানে আন্তরিক তা ভিডিওর ওই শিরোনামে স্পষ্ট হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দৃশ্যত ইতিবাচক চুক্তি হলেও তারা কাজের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো অবস্থান নিয়েছে।  তারা যেভাবে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চাচ্ছে তাতে অনন্তকাল কেটে যাবে।  এ ফন্দিফিকির বন্ধে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বাড়ানোর বিকল্প নেই। তাদের সোজা পথে আনার এটিই প্রকৃষ্ট পথ।

সর্বশেষ খবর