রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

পাকিস্তান কাহিনী

জিয়াউল হকের মৃত্যুর পর পাকিস্তানে সরাসরি সামরিক বাহিনীর শাসন কায়েম রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সামরিক বাহিনীর একটানা ১১ বছরের শাসন জনমতে যে ঘৃণার সৃষ্টি হয় তা এড়ানোই সামরিক বাহিনীর আশু কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সেনাপ্রধান আসলাম বেগ নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে একটি তাঁবেদার সরকার প্রতিষ্ঠার অভিলাষ নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেন। জিয়াউল হকের মৃত্যুর পর সংবিধান অনুযায়ী গুলাম ইসহাক খান প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। তার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পিপলস পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনে পিপলস পার্টিকে হারানোর জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করা হলেও তা কাজে আসেনি। প্রেসিডেন্ট ইসহাক ও জেনারেল আসলাম বেগ প্রভাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নেয় কেবল জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ভোট দেওয়া যাবে। ফলে ভোটার হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের এক-পঞ্চমাংশ মানুষ সে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। যারা মূলত গ্রামের কৃষক ও শহরের শ্রমিক। এদের সিংহভাগই ছিল পিপলস পার্টির সমর্থক। পাকিস্তানি সেনা গোয়েন্দা বাহিনীর এজেন্টরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচারণা চালায় ইসলামে নারী নেতৃত্ব নিষিদ্ধ এবং কোনোভাবেই একজন মহিলাকে দেশের শাসনভার দেওয়া উচিত হবে না। নানামুখী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার সত্ত্বেও নির্বাচনে বেনজির ভুট্টোর পিপলস পার্টি মোট ২১৫ আসনের ৯২টিতে জয়ী হয়। সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট আইজেআই জোট পায় ৫০ আসন। নির্বাচনে জয়ী দলকে বাদ দিয়ে সংখ্যালঘিষ্ঠদের দিয়ে সরকার গঠনের ষড়যন্ত্রও চলে। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় বেনজিরই শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। জেনারেল আসলাম বেগের ইচ্ছা পূরণে প্রেসিডেন্ট ইসহাক খান ১৯৯০ সালের ৬ আগস্ট বেনজিরকে বরখাস্ত করেন। ওই বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুসলিম লীগ নেতা নওয়াজ শরিফ জয়ী হন।  তার জয়ের পেছনে সেনাবাহিনীর নানামুখী সহযোগিতা ছিল। জাফর খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর