শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

এতিমকে ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

এতিমকে ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে

পিতৃহীন নাবালক সন্তানকে এতিম বলা হয়। এতিমকে ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে। তার ন্যায্য অধিকার তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। আল্লাহতায়ালা এতিমের সম্পদ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। যারা এতিমের সম্পদ লুণ্ঠন করে, তাদের প্রাপ্য অধিকার আদায় করে না, এমন পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে কঠোর পরিণতির কথা বর্ণনা করেছেন।

এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা এতিমের সম্পদ বুঝিয়ে দাও এবং অপবিত্র সম্পদকে পবিত্র সম্পদ দ্বারা বদল করো না। আর তাদের সম্পদকে তোমাদের সম্পদের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রাস করো না। নিশ্চয় এটা মহাপাপ।’ (আল কোরআন)।

মহান রব্বুল আলামিন কোরআনের অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘যারা এতিমের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, তারা মূলত তাদের পেট আগুন দ্বারা পূর্ণ করছে; আর অচিরেই তারা জাহান্নামের প্রজ্বালিত আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সূরা নিসা : -১০)।

আমাদের সমাজে অনেক বিত্তবানকে দেখা যায়, যদি কোনো এতিম অনাথ বা ভিক্ষুক তার কাছে সাহায্যপ্রার্থী হয়ে আসে, তখন তাদের সঙ্গে ধমকের স্বরে কথা বলে, তাদের প্রতি কঠোর ব্যবহার করে। আবার অনেকে তাদের শরীরিকভাবে আঘাত করতেও দ্বিধাবোধ করে না। অথচ মহান আল্লাহ এতিম ও ভিক্ষুকদের সঙ্গে এহেন আচরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করে আল কোরআনে ইরশাদ করেন,  ‘এতিমের প্রতি কঠোরতা গ্রহণ করো না। ভিক্ষুককে ধমক দিও না। তোমার রবের অনুগ্রহ বর্ণনা কর।’ (সূরা দোহা : ৯-১১)।

ইসলাম সমাজের ধনবান, সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীদের সম্পদে নিঃস্ব, এতিম, বিধবা ও দুর্দশাগ্রস্তদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। যারা এতিমকে ভালোবাসে, তাদের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রিয় নবী (সা.) তাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করেছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুসলমানের ওই বাড়ি সর্বোত্তম, যে বাড়িতে এতিম আছে এবং তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়। আর ওই বাড়ি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যে বাড়িতে এতিম আছে অথচ তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়। অতঃপর তিনি তাঁর দুই আঙ্গুলের দিকে ইশারা করে বললেন, আমি এবং এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এমন কাছাকাছি অবস্থান করব।’ (ইবনে মাজাহ)।

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোনো এতিম ছেলে বা মেয়ের মাথায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে স্নেহের হাত বুলিয়ে দেয়, মাথার যতগুলো চুলের ওপর দিয়ে তার হাতটি অতিক্রম করবে, সেই পরিমাণ সওয়াব তার আমলনামায় জমা হবে। আর সে যদি এতিমের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, তাহলে এ দুই আঙ্গুলের মতো আমি এবং সে জান্নাতে অবস্থান করব। অতঃপর তিনি তার দুই আঙ্গুল মিলিয়ে দেখালেন। (মুসনাদে আহমাদ)।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা (ভাঙ্গা প্রেস), যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Email : [email protected]

সর্বশেষ খবর