বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা জনপদে ধ্বংসযজ্ঞ

বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মর্মাহত হয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। এক টুইট বার্তায় বলেছেন, উত্তর রাখাইন সফরের সময় যা দেখেছেন তাতে তিনি মর্মাহত। সেখানে তিনি পুড়িয়ে দেওয়া শত শত গ্রামের চিহ্ন দেখেছেন। বিবিসির ইংরেজি সার্ভিসের অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্রিটিশ মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি রোহিঙ্গা সংকটের ভয়াবহতা পুরোপুরি বোঝেন কিনা, তা নিয়ে তার সন্দেহ আছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকটকে অস্বীকার করছে কিনা— বিবিসির এমন প্রশ্নের উত্তরে বরিস জনসন বলেছেন, নেপিদোয় মিয়ানমারের রাজনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা ও সু চির বক্তব্য শোনার পর তার মনে হয়েছে, যে ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে, সে বিষয়ে তাদের ধারণা নেই। ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেছেন, সু চির কাছে তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাজ্যের গভীর উদ্বেগ তুলে ধরেছেন। তিনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার পূর্ণ ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ ছাড়া তিনি রোহিঙ্গাদের নির্ভয়ে স্বদেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলোকে সম্মান জানানোর ওপর জোর দিয়েছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাখাইন রাজ্য সফর করেছেন হেলিকপ্টারে করে এবং ধ্বংসযজ্ঞের কয়েক মাস পরে। ইতিমধ্যে বর্ষা মৌসুমে ধ্বংসযজ্ঞের বেশির ভাগই নিশ্চিহ্ন হওয়ার কথা। তার পরও রোহিঙ্গা জনপদে ধ্বংসযজ্ঞের যে চিহ্ন রয়ে গেছে তা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চোখ এড়ায়নি। এ ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের নির্বিকার মনোভাব দুর্ভাগ্যজনক। ব্রিটিশ মন্ত্রী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নির্ভয়ে ফেরার মতো পরিবেশ সৃষ্টি এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করার যে তাগিদ দিয়েছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন জীবন বাঁচানোর তাগিদে। এজন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা মাইলের পর মাইল রাস্তা হেঁটে এসেছেন। সাগর পাড়ি দিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার পথে শত শত রোহিঙ্গাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। রাখাইনে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির অবসান, জীবনের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত না হলে তাদের আবার মৃত্যুকূপে ঠেলে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষত মিয়ানমারের মদদদাতা শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ চীনকে মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

সর্বশেষ খবর