শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শুভবুদ্ধির জয় হোক

নূরে আলম সিদ্দিকী

শুভবুদ্ধির জয় হোক

২০১৮ সালটি নানা আঙ্গিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। ঘাত-প্রতিঘাত, বাধা-বিপত্তি, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বাদ-বিসম্বাদ রাজনীতিতে আছে, থাকবে এবং থাকতেই পারে। তারপরেও এদেশের প্রান্তিক জনতা ২০১৮-কে নির্বাচনের বছর হিসেবেই ধরে নিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এবং রাজনীতির সঙ্গে অনুভূতির গভীরে একটা নির্মোহ সম্পৃক্ততার কারণে আমি একান্তে  যখন এদেশের প্রান্তিক জনতার নির্বাচনের প্রতি অনুরাগের কথা ভাবি, বিশ্লেষণ করি, তখন প্রচণ্ড একটা ভালোলাগা আমার অনুভূতিকে আন্দোলিত করে। নির্মোহ চিত্তের প্রান্তিক জনতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এদেশে নির্বাচন পদ্ধতির শুরু সেই ১৯৩৫ সাল থেকে। তখন শিক্ষার হার আজকের পর্যায়ে ছিল না, এত প্রচণ্ড রাজনৈতিক ডামাডোলও বাজত না। প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যেতেন না। নানারূপ প্রতিশ্রুতি (মিথ্যা) দিতেন না। ভোটার; অর্থাৎ— প্রান্তিক জনতার মধ্যে মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে কোনো প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করতেন না। তবুও মানুষ বহু দূরে দূরে স্থাপিত নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে আনন্দ-উদ্বেলিত চিত্তে ভোট প্রদানে উৎসাহ বোধ করত। যেন মহাউৎসবে তারা অংশ নিতেন। তখনকার যোগাযোগ-ব্যবস্থা স্থলপথে দুর্গমই ছিল। জলপথই মূলত নির্বাচনকে উৎসবের রূপ প্রদান করত। যারা প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থী ছিল, ঐশ্বর্য-প্রাচুর্য বিত্ত-বৈভব যাদের ছিল; বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তখনকার দিনে তারাই প্রার্থী হতেন। এই তো সেদিন, তখন আমরা কৈশোরে পা দিয়েছি, শিশুকাল পেরিয়ে তখন আমরা কৈশোরের পদযাত্রিক। তবুও নির্বাচনে অংশ না নিলেও একটা নৈর্ব্যত্তিক আনন্দে আমাদের পূর্বসূরিদের সঙ্গে উত্ফুল্ল হৃদয়ে ভোট চেয়ে, গান গেয়ে মাইলের পর মাইল পেরিয়ে ছুটে বেড়াতাম। ক্লান্তি-অবসন্নতা ও অবসাদ আমাদের দেহমনকে আচ্ছন্ন করেনি। বরং, অনাবিল আনন্দে শরীর ও মনকে উত্ফুল্ল করে রাখত। কী আশ্চর্যের বিষয়, তখন প্রার্থীর বক্তৃতার অর্থ বুঝতাম না, অথচ বড়দের সঙ্গে সভায় যেতাম। অবাক বিস্ময়ে বক্তাদের বক্তৃতা শুনতাম। তেমন কিছুই বুঝতে পারতাম না, তবুও শুনতাম, ভালোও লাগত। কখনো কখনো স্বপ্ন দেখতাম, আমিও যদি তাদের মতো মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করার সুযোগ পেতাম! মঞ্চের বক্তারা যেন পৃথিবীর সবচেয়ে গর্বিত ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। সে যাই হোক, নিজ খরচায় নৌকায় করে অনেক দূর পর্যন্ত গিয়ে সঙ্গে নেওয়া চিঁড়া-মুড়ি খেয়ে ভোটাররা ভোট দিয়ে আসতেন। তখনকার দিনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উকিল সাহেবরাই প্রার্থী হতেন। ঠেকা-বেঠেকায় মামলা-মোকদ্দমায় উকিল সাহেবদের কাছে তো সাধারণ মানুষকে ধরনা দিতেই হতো। তাই ভোটের সময় তাদের ভোট দেওয়া এবং তাদের পক্ষে ভোট চাওয়াটা তেমন বিড়ম্বনার কিছু ছিল না। কিন্তু আজকে দৃশ্যপটটা পুরোই বদলে গেছে। উৎসবের পরিবর্তে নির্বাচন আজকালকার দিনে দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও আতঙ্কের বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

যেটা আমাকে আজকে সবচেয়ে বেশি মর্মাহত করে, আমরা অনেক সময় পেরিয়ে এসেছি, প্রায় শতাব্দীর দোরগোড়ায়। কিন্তু নির্বাচনের স্থিতিশীলতা আজও নিশ্চিত করতে পারিনি। এটা রাজনীতিবিদদের মেজাজ-মর্জি ও খেয়ালখুশির ওপরই অনেকটা নির্ভরশীল। আমাদের দেশের মানুষ গণতন্ত্রসচেতন, তাই তারা বারবার ধোঁকা খাওয়ার পরও নির্বাচন এলেই আশা-প্রত্যাশায় বুক বাঁধে। অতীতের সব ধরনের গ্লানি ভুলে গিয়ে আবার মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হলো— পাকিস্তান আমলে দেশটি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেল। পাকিস্তান আমলের ২২টি বছর দেশ শাসিত হয়েছে সেনাবাহিনীর পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে। এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলন তার স্বাভাবিক গতিধারায় একেকটি সোপান উত্তরণের মধ্য দিয়ে স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় রূপ লাভ করেছে এবং অসীম ত্যাগের মহিমায় স্বৈরাচারিতার বক্ষ বিদীর্ণ করে সফলতার সূর্যকে ছিনিয়ে এনেছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। যথা পূর্বং তথা পরং। আমাদের দেশে রাজনীতি স্থিতিশীলতা পেল না তো পেলই না, ভাঙা-গড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়ে গেল আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন। যে দল ক্ষমতায় আসে ক্ষমতা পেয়েই তারা ইউটার্ন নিয়ে ফেলেন। জনতার থেকে মুখ ফিরিয়ে তারা দেশ শাসন করতে চান পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির মাধ্যমে। যে জনগণ তাদের ক্ষমতার উৎস তাদের স্বার্থরক্ষা করা বা তাদের ওপর নির্ভর করা তো দূরে থাক তাদের সঙ্গে সব লেনাদেনা চুকিয়ে যেন পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে নতুন সম্পর্কের গাঁটছড়া বাঁধেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শিক্ষার হার ও অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটা আমাদের কাছাকাছি হলেও রাজনীতিটা সম্পূর্ণ ভিন্নতর। শত প্রতিকূলতার মুখে ভারতের রাজনীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। ক্ষমতায় আসলে ক্ষমতার কিছু অপব্যবহার ভারতবর্ষেও হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অধিকার ও অনুশীলন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয় না। সেখানে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন সমুন্নত ও গৌরবের সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গমালায় সগৌরবে অবস্থান করছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে তারা কারও আজ্ঞাবহ থাকে না। তাই পশ্চিমবঙ্গে বাম জোট ২৮ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকার পর তৃণমূলের সৃষ্ট নির্বাচনী ঝড়ে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। কবে যে তারা আবার মেরুদণ্ড খাঁড়া করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে তা ভবিতব্য বিষয়। আমাদের দেশে ক্ষমতার চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। ক্ষমতাসীনরা ধরেই নেন, তারা কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। যে কোনো একটা নির্বাচন ক্ষমতা উল্টেপাল্টে দিতে পারে, এটা তারা বেমালুম বিস্মৃত হন। তাদের ওপর জনগণের আস্থায় যতই ধস নামুক না কেন, মুখ্য নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সবাই ভাবেন, জনগণের অনাস্থা তাদের ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না। পুলিশি নির্যাতন, গ্রেফতার, খুন-গুমের মধ্য দিয়ে তারা তাদের দুর্দমনীয় দাপট ও প্রভাব খাটিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে নেবেন। যার ফলে আন্দোলন করতে হয়, রক্ত ঝরে— তারপরেই পটপরিবর্তিত হয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই নব্বইয়েই জেনারেল এরশাদ ছিলেন স্বৈরাচারী সরকার হিসেবে চিহ্নিত কিন্তু আজকের দিকে তাকালে মনে হয় তিনি অনেক বেশি উদারচিত্ত ও সহনশীল ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি যে অভিনব পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তা ভাবলেও অবাক লাগে। ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পেছনে তার মনে যে জিনিসটি সবচেয়ে প্রভাব ফেলে সেটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষটিকে এড়িয়ে যাওয়া। পৃথিবীর সেনাশাসকদের ব্যাপক রক্তক্ষরণ এড়িয়ে এভাবে ক্ষমতা থেকে নীরবে বিদায় নেওয়া পৃথিবীর সেনাশাসকদের কাছে একটি বিস্ময়কর ঘটনা। আমার ধারণা— আত্মহনন, অস্থিরতা ও রাজনীতিতে সঠিকভাবে পথপরিক্রমণ করতে পারলে জনগণ আবার তাকে মহাসমারোহে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারত। কিন্তু তার প্রতিবন্ধকতা তিনি নিজেই। ‘জননেত্রী’ এবং ‘দেশনেত্রী’র যে রেষারেষি, হিংসা, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধপরায়ণতার রাজনীতি আজকে প্রচলিত, সেখানে এরশাদ সাহেব একটু স্থিতিশীল থাকলে ক্ষমতা তার কাছে অধরা হতো না। কিন্তু এরশাদ সাহেব এ দুই দাম্ভিক, হিংসুটে ও আত্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের নেতিবাচক দিকটার সুযোগ তো কাজে লাগাতে পারেন-ই নি, বরং নানা উল্টাপাল্টা কথার মধ্য দিয়ে তিনি জনগণের কাছে নিজেকে হাস্যকর করে তুলেছেন। তিনি অসম্ভব বেশি কথা বলেন কিন্তু কথার মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য থাকে না। যাই হোক, যে কথাটায় আসতে চাই, এ দুই অহংকারী উদ্ধত মহিলা নেতৃত্ব দেশটাকে তাদের এজমালি সম্পত্তি ও জনগণকে তাদের প্রজা ভাবেন। এটা ২০১৮। এ বছরেই নির্বাচন হওয়া উচিত। জনগণও উদ্গ্রীব এবং উদ্বেলিত হৃদয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণে প্রচণ্ডভাবে আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এতই আনপ্রেডিক্টেবল যে, কিছুই নিশ্চিত করে বলা যায় না।

রাজনীতিতে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এটাই স্বাভাবিক, এটাই সত্য। কিন্তু এক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব ব্যাপক ব্যত্যয় ঘটায়, রাজনীতিতে অস্থিরতার সৃষ্টি করে। ১/১১-এর পর দুদক যে মামলাগুলো দাঁড় করিয়েছিল, সেখানে দৃশ্যমান পক্ষপাতিত্ব হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেত্রী ও অনুসারীদের প্রায় সব মামলাই স্থগিত করা হয়েছে ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুদক কোনো আপিল করেনি। কিন্তু বিএনপির ক্ষেত্রে বিষয়টি উল্টো ধারায় প্রবাহিত হয়েছে। এটা শুধু দৃষ্টিকটু নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়ও মারাত্মক অন্তরায়। যে মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে সেটি সঠিক না বেঠিক তা নির্ধারণের জন্য আরও দুটি উচ্চ আদালত রয়েছে। কিন্তু আমজনতার প্রশ্ন, ক্ষমতাসীনদের মামলাগুলো ফাইলবন্দি কেন? কেন সেগুলো একইভাবে আদালতের আওতায় এলো না?

ক্ষমতাসীনদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে ভূরি ভূরি রয়েছে। এই তো সেদিন, ভারতের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব মামলায় শাস্তি পেলেন, কারাগারেও গেলেন। তাতে তার ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়নি, তা বলা যাবে না। কিন্তু লালুপ্রসাদ যাদবের দল এবং তার রাজনীতি অবলুপ্ত হয়ে যায়নি। তিনি রাজনীতিতে আছেন এবং অবস্থার প্রেক্ষাপট মোকাবিলায় তৎপর আছেন। বাংলাদেশে একটা প্রবাদপ্রতিম কবিতা আছে, ‘ফুল পড়ে কুঁড়ি হাসে, থাক রে কুঁড়ি তোরও একদিন আছে’।

সম্প্রতি শুনলাম, বিএনপির অনলাইন পেজে আমাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, আমি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেছি— মামলা হলে শেখ হাসিনারও ৫০ বছর জেল হতে পারে। কোনো একদিন এ মামলা হবেই এবং শাস্তিও অবধারিত। আমি লেখাটি পড়িনি। অনেক বিশ্বস্ত সুহৃদ ও বন্ধু আমাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। তবে আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, এ মামলা ও খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে কোথাও কোনো মন্তব্যই আমি করিনি। হয়তো আগের কোনো নিবন্ধে মন্তব্যটি আমার করা ছিল। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের বিষয়ে এ মুহূর্তে আমি কোনো মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক। কিন্তু এ রায় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি আমাকে, আমার চেতনাকে অনেকখানি বিব্রত করেছে। পাকিস্তানের এককালীন প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান সৃষ্টির কালে অবিভক্ত বাংলার প্রিমিয়ার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৬২ সালে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে বাড়াবাড়িটা ছিল না। খালেদা জিয়া কোথায় আছেন, কী দিয়ে নাস্তা খাচ্ছেন, ডিম ওমলেট না পোচ, টোস্টে বাটার না জেম, ঘরের এসি কীভাবে কাজ করছে— এ নিয়ে সংবাদপত্রে যে মাতম উঠল তা সত্যিই বিস্ময়কর ও অনভিপ্রেত। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তাকে কারারুদ্ধ করে সুবিধাবঞ্চিত রেখে কষ্ট দেওয়ার যে কোনো প্রচেষ্টা সংবাদমাধ্যমের আলোচনার বিষয়বস্তু তো হবেই, জাতীয় রাজনীতির অঙ্গনেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠা উচিত। কিন্তু জেল সুপারিনটেনডেন্টের গৃহে অন্তরীণ থাকা বেগম জিয়ার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারের ফটকে ২৪ ঘণ্টার জন্য সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক নিয়োজিত রাখা আমার দৃষ্টিতে বাড়াবাড়িরই নামান্তর। উনারা দেশটাকে তো নিজেদের এজমালি সম্পত্তি ভাবতেই পারেন। কারণ, এর উপাদান তো নানাভাবে তৈরি করা হয়। খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না এ আলোচনাটি অবশ্য রাজনীতিতে প্রণিধানযোগ্য। অবশ্য বিএনপির তরফ থেকে স্পষ্ট জানান দেওয়া হয়েছে যে, এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে তারা অংশ নেবেন। ঘোষণাটি গণতন্ত্রের পক্ষে স্বস্তি এনেছে বিধায় অভিনন্দনযোগ্য। আমি সর্বান্তকরণে কামনা করি, আর যেন কোনো রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো টালমাটাল পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়। গণতন্ত্র যেন আবারও মুখ থুবড়ে না পড়ে। দেশের ভিতরের ও বাইরের কোনো অপশক্তি যেন গণতন্ত্রের পথপরিক্রমণে প্রতিন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে। এ বছরের ডিসেম্বরের নির্বাচনটি ভালোয় ভালোয় সম্পন্ন হলে, গণতন্ত্র স্থিতিশীলতার মুখ দেখবে, দেশ অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এবং রাজনৈতিক সংকটের আবর্তে নিপতিত হবে না।  এ প্রত্যাশা থেকে আমি সরে আসতে চাই না। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে আল্লাহর কাছে আমার ফরিয়াদ— আল্লাহ, সব মহলের শুভবুদ্ধিকে জাগ্রত রাখুন।  জাতির প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট সবার হৃদয়ে জাগ্রত রাখুন।      

লেখক : স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর