বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতের চালচিত্র

সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে

চিকিৎসা একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশবাসীর সব মৌলিক অধিকার পূরণ। এ লক্ষ্য অর্জনে চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য খাতকে স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে একের পর এক হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। দেশে চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রেও অর্জিত হয়েছে যুগান্তকারী সাফল্য। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সোমবার সংসদে জানিয়েছেন, দেশের সরকারি স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানে চাকরিরত একজন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসাপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৭৯। সনদপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি ডাক্তারের সম্মিলিত অনুপাতে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে সেবাপ্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৪৭। জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি ৮১ লাখ। স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তারের মোট পদ ২৪ হাজার ২৮ এবং কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা ২২ হাজার ৩৭৪। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ ওষুধের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভরশীল ছিল এবং অনেক উচ্চমূল্যে জনগণকে ওষুধ কিনতে হতো। ইতিমধ্যে দেশ ওষুধ আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারকে পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ওষুধ সুনাম অর্জন করেছে। দেশের হাসপাতালগুলোয় যে শূন্যপদ রয়েছে তা পূরণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে ৫ হাজার নতুন ডাক্তার নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ডাক্তারের ঘাটতি পূরণ সম্ভব হবে। দেশবাসীর স্বাস্থ্য পরিচর্যায় সরকারের সক্রিয় ভূমিকার যে চিত্র সংসদে তুলে ধরা হয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। সবারই জানা, স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চমক দেখিয়েছে। প্রসূতি ও শিশুমৃত্যু রোধেও বাংলাদেশ অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। জন্মশাসনেও বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজস্ব ব্যয় সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য খাতে দেশবাসীর যে অর্থ ব্যয় হয় তার মাত্র ২৩ ভাগ ব্যয় করে সরকার। বাকি ৭৭ ভাগ ব্যয় হয় ব্যক্তির নিজস্ব অর্থ থেকে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী সব দেশে সরকারি ব্যয় অনেক বেশি। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করে নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য আনার কথা ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর