বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান

১৬ কোটি মানুষকে সম্মানিত করার শামিল

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভূমিকা রেখেছে। গর্বিত জাতি হিসেবে বিশ্ব সমাজে স্থান করে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে দেরিতে হলেও কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভিআইপির মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। এমন একটি প্রস্তাব মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে অর্থ বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে যুদ্ধাহতদের পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার প্রদান এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হবে। ভিআইপি মর্যাদাধারী মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সব জেলার সার্কিট হাউসের ভিআইপি রুম ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। রেল, বিমান, বাস ও লঞ্চে যাতায়াতে বিশেষ সুবিধাসহ রাষ্ট্রীয় অন্যান্য সম্মান ও মর্যাদা এবং সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। খেতাবপ্রাপ্ত এবং যুদ্ধাহতদের ভিআইপি মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য রেশন কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নীতিমালাও তৈরি করেছে। খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ১১২ জন বেঁচে আছেন। দেশে বর্তমানে ৫ হাজার ৬৬৬ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। স্মর্তব্য, মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৬৭৬ জন। এদের মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি পান ৭, বীরউত্তম ৬৮, বীরবিক্রম ১৭৫ এবং বীরপ্রতীক খেতাব পান ৪১৬ জন। খেতাবপ্রাপ্ত এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভিআইপি এবং শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য রেশন কর্মসূচি চালুর মাধ্যমে তাদের প্রতি বিশেষ সম্মান দেখিয়ে প্রকারান্তরে ১৬ কোটি মানুষের মহান জাতিকেই সম্মানিত করা হচ্ছে। বাঙালিরা তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও শ্রদ্ধাশীল সেটি নিশ্চিত করা হলো। আমাদের বিশ্বাস সরকারের এই ইতিবাচক উদ্যোগ যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মানসিক তৃপ্তি এনে দেবে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় সবাই ষাটোর্ধ্ব তাদের শেষ জীবনটা কিছুটা হলেও মর্যাদার ছোঁয়া পাবে। যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রেশনের ব্যবস্থাও নিঃসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সদস্যদের অসহায়ত্ব দূরীকরণে রেশনের ব্যবস্থা ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

সর্বশেষ খবর