বৃহস্পতিবার, ১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী

বৈধতা অর্জনে আরও তৎপর হতে হবে

দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রায় আনুমানিক হিসাবে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি ভিসা বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই অবস্থান করছেন। অবৈধভাবে বিদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান তাদের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রেও সংকট সৃষ্টি করছে। বৈধ কাগজপত্রের অভাবে তারা বিদেশে সন্তোষজনক বেতনের কোনো কাজ যেমন পাচ্ছেন না, তেমন প্রতি মুহূর্তে ধরাপড়ার ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে। অবৈধভাবে অবস্থান করা বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, আমিরাতের মতো শ্রমঘন দেশগুলোতে যেমন আছেন তেমনি আছেন ইউরোপ-আমেরিকাতেও। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতেই দেড় লাখের বেশি বাংলাদেশি ভিসা বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থান করছেন। কমপক্ষে দেড় লাখ অবৈধ বাংলাদেশি আছেন শুধু মালয়েশিয়াতেই। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছেন কমপক্ষে আরও প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি। সরকারের নানামুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ১০ লাখ ৭৭ হাজার অভিবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক বৈধতা পেয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরবে প্রায় আট লাখ এবং মালয়েশিয়ায় দুই লাখ ৬৭ হাজার। বিদেশে যেসব প্রবাসী কর্মী পরিচয়পত্রহীন অবস্থায় রয়েছে তাদের সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনের মাধ্যমে বৈধকরণের জন্য আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বৈধ করা সম্ভব হচ্ছে না তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। শ্রমঘন দেশগুলোতে সাধারণ ক্ষমার আওতায় বিভিন্ন সময়ে বৈধতা অর্জনের বিশেষ সুযোগ পাওয়া গেলেও পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে অবৈধভাবে অবস্থানের সুযোগ কমে আসছে। ওইসব দেশে অবস্থানরত বিশাল সংখ্যক অভিবাসী বাংলাদেশিকে থাকতে হচ্ছে অনিশ্চয়তায়। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে বিবেচিত। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে অবস্থানের অজুহাতে দেশে ফেরত পাঠানো হলে তা যেমন ভয়াবহ সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করবে তেমন অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ হয়ে দেখা দেবে। এ প্রেক্ষাপটে বিদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের বৈধতা দানে দেশের কূটনীতিক মিশনগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের সহানুভূতি অর্জনেও হতে হবে তৎপর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর