বৃহস্পতিবার, ১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আল্লাহর সব সৃষ্টিকে ভালোবাসতে হবে

মাওলানা আবদুর রশিদ

আল্লাহ পৃথিবীসহ গ্রহ নক্ষত্র এবং মানুষসহ সব প্রাণী গাছপালা উদ্ভিদের সৃষ্টিকর্তা। সোজা কথায় যা কিছু সৃষ্ট সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা তিনি। কারণ আল্লাহ ছাড়া কারোরই সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই। আল্লাহ যেহেতু সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা সেহেতু তিনি চান তার সৃষ্টিজীবরা তার সব সৃষ্টির প্রতি মমত্ববোধ করুক। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের উচিত অপর সব মানুষের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সহমর্মিতার পরিবেশ বজায় রাখা। শুধু মানুষ নয়, প্রতিটি মানুষের কর্তব্য সব সৃষ্টি তা পশুপাখি হোক, গাছপালা হোক, নদী পাহাড় হোক সব কিছুর প্রতি মমত্ববোধ পোষণ করা।

সদাচরণ ও সেবার বিষয়টি মানব জাতির জন্যই কেবল নির্ধারণ করা হয়নি বরং যে কোনো প্রাণীকে সেবা করলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হবে। এ মর্মে একটি হাদিসে ইরশাদ করেন— যে মুসলমান গাছ লাগায় অতঃপর এটা থেকে যা খাওয়া হয় তা বৃক্ষরোপণকারীর জন্য সদকা হয়ে যায়, যা চুরি হয়ে যায় তা তার জন্য সদকা হয়ে যায়, যা কোনো হিংস্র প্রাণী খায় তাও তার জন্য সদকা হয়ে যায়, যা কোনো পাখি খায় তাও তার জন্য সদকা হয়ে যায় এবং কেউ যদি বৃক্ষের কোনো কিছু কেটে নেয় তাও তার জন্য সদকা হয়ে যায়। (মুসলিম-৩৯৬৮)।

আল্লাহর সৃষ্টি পশু-পাখির সেবা ও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বনি ইসরাইলের একজন খারাপ মহিলাকে এ সেবার কারণে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। হজরত আবু হুরাইরা (র.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী (সা.)  ইরশাদ করেন— একটি বদকার মহিলা গরমের দিনে একটি কুকুরকে কুয়ার পাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখল, কুকুরটি তৃষ্ণায় জিহ্বা বের করে ফেলেছিল। তখন মহিলাটি নিজের চামড়ার মোজা খুলে তা দ্বারা পানি উঠিয়ে কুকুরটিকে পান করাল, এতে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। (মুসলিম)।

সোজা কথায় সব সৃষ্টির সঙ্গে সদাচরণ ও সৃষ্টির সেবা এক মহান ইবাদত। এ ধরনের ইবাদতকারীকেই আল্লাহ পছন্দ করেন। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর সৃষ্টি জীবের সঙ্গে সদাচরণ করে না এবং তাদের সেবায় এগিয়ে আসে না তাদের তিরস্কার করে আল-মাউন নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরা নাজিল করেছেন— অর্থ আপনি কি তাদের দেখেছেন যে শেষ বিচারকে অস্বীকার করে? এবং এ তো সেই যে এতিমকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। এবং অভাবগ্রস্তকে অন্নদানে উৎসাহ দেয় না। অতএব দূর হোক সেই নামাজিদের যারা নিজেদের নামাজ সম্বন্ধে উদাসীন, যারা লোক দেখানো আমল করে এবং (মানুষকে) নিজ ব্যবহার্য জিনিসও দেয় না। (পারা-৩০)।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর