শনিবার, ৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিল্পায়নের মহাপরিকল্পনা

সঠিকভাবে বাস্তবায়ন কাম্য

দেশের দ্রুত শিল্পায়নে জাপানের কিয়াসু দ্বীপের কৌশল অনুসরণ করে মহেশখালী ও মাতারবাড়ীকেন্দ্রিক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এ উদ্দেশ্যে পুরো মহেশখালীকে একটি পরিকল্পিত শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে থাকবে পৃথক বিদ্যুেকন্দ্র, ইকোনমিক জোন ও ট্যুরিজম পার্ক। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি শক্তিশালী কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দেশকে শিল্পে সমৃদ্ধ করতে গত শতাব্দীর ষাটের দশকে জাপান যে ‘প্যাসিফিক বেল্ট’ নীতি গ্রহণ করে তারই উদ্যোগ হিসেবে দেশটির রাজধানী টোকিওর উত্তর দিক থেকে কিয়াসু দ্বীপের ওসাকা পর্যন্ত ১২০০ কিলোমিটার এলাকা শিল্পায়নের জন্য নির্ধারণ করা হয়। যেটি বাস্তবায়নের পর ১০ বছরে জাপানের মাথাপিছু জাতীয় আয় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। বর্তমানে প্যাসিফিক বেল্টে ১০টি বড় আকারের অর্থনৈতিক জোন রয়েছে, যেখানে প্রায় ৫ লাখ শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। দেশটির মোট উৎপাদনের ৮০ শতাংশ আসে সেখান থেকে আর লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ওইসব কল-কারখানায়। সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী মহেশখালীকে একটি ট্যুরিজম শহর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সোনাদিয়া দ্বীপে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এ জন্য প্রায় ১০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। মাতারবাড়ীকে কেন্দ্র করে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হবে। একটি জোন হবে মাতারবাড়ী এনার্জি হাব, যার পুরোটাই হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আরেকটি জোন হবে স্টিল মিল করার জন্য। মহেশখালী ও মাতারবাড়ীর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইকোনমিক জোনে শিল্প স্থাপনে উৎসাহী হবে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এই মহাপরিকল্পনা। পরিবেশবান্ধব এই শিল্পনগরী দেশের উন্নয়ন ক্ষেত্রে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে। তাত্ত্বিক বিবেচনায় এ মহাপরিকল্পনার যৌক্তিকতা অনস্বীকার্য হলেও সঠিকভাবে এর বাস্তবায়নের ওপরই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য নির্ভর করছে।  এ বিষয়টি মনে রেখে সঠিকভাবে এবং যথাসময়ে তা যাতে বাস্তবায়িত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর