রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

মশার আগ্রাসন

ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসীকে স্বস্তি দিন

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে রাজধানীর দেড় কোটি বাসিন্দা। চট্টগ্রাম মহানগরীর ৬০ লাখ মানুষও একই দুর্ভোগের শিকার। বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল সর্বত্রই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মশা। রাতে তো বটেই দিনের বেলায়ও চলছে সমানে আনাগোনা। মশারি খাটিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে কিংবা মশানাশক ওষুধ স্প্রে করেও রক্ষা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। মশা নিধনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনে তারা কতটুকু তৎপর তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। নাগরিকদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হলেও তা নিয়মিত নয়। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার পুকুর-ডোবা, নালা-নর্দমার কচুরিপানা ও ময়লা পরিষ্কার না করায় সেগুলো মশা উৎপাদনের খামার হিসেবে বিরাজ করছে। মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন কম নয়। স্প্রেম্যানরা ওষুধ ছিটানোর পর মশা মাটিতে পড়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর আবার ঠিকই উড়ে যায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন গত দুই বছরে মশা নিধনে ব্যয় করেছে ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। চলতি বছর ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত দুই বছরে ২৭ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করার পর চলতি বছর ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ের বরাদ্দ দিয়ে মশা নিধনে সাফল্য নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বরাদ্দ বাড়লেও মশা নিধনে দৃশ্যমান সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে অধিক মশাপ্রবণ এলাকাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে মশা নিধন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। পুকুর-ডোবার কচুরিপানা অপসারণ করে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মশা নিধনে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উদ্যোগের অভাব না থাকলেও রাজধানীর দেড় কোটি মানুষকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে গিয়ে দুই সিটি করপোরেশনই হিমশিম খাচ্ছে। একই ধরনের হতাশাজনক পরিস্থিতি চট্টগ্রামেও। মশার উপদ্রব নগরবাসীর স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২ কোটিরও বেশি মানুষকে স্বস্তিদানে মশা নিধনে শুধু তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নয়, স্থায়ী পরিকল্পনা নিতে হবে। ডোবানালা ও নোংরা জলাশয়গুলো যাতে মশা উৎপাদনের খামার হয়ে না ওঠে সেদিকে নজর দিতে হবে। মশা নিধনে শুধু বরাদ্দ বৃদ্ধি নয়, প্রয়োজন সব পক্ষের সচেতনতা। রাজধানী এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর ধারেকাছের ডোবানালা পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেওয়া হলে মশার উৎপাত শতভাগ দূর না হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর