শিরোনাম
রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাওরের ফসল রক্ষার বাঁধ

নির্মাণ ও সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করুন

হাওর এলাকার বোরো ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শম্বুক গতিতে চলায় এ বছরও ফসল হারানোর আশঙ্কায় ভুগছে কৃষক। বাঁধ নির্মাণের মহা লাভজনক কাজের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হাত থেকে সরে যাওয়ায় তারা সংস্কারের কাজে তেমন গরজও দেখাচ্ছে না। পাউবো এবং বাঁধ নির্মাণসংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির হিসাবমতে বাঁধ নির্মাণসংক্রান্ত ৯৪৭টি প্রকল্পের মধ্যে এ যাবৎ মাত্র ৪৫০টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে প্রায় ৫০০ প্রকল্পের কাজ। চলতি মাসে আগাম বন্যা হানা দিলে গত বছরের মতো হাওর এলাকার ফসলের সর্বনাশ ডেকে আনবে। সারা দেশের জন্য খাদ্য ঘাটতি অনিবার্য হয়ে উঠবে। গত মৌসুমে বাঁধ নির্মাণে পাউবো ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ঠিকাদার প্রথা বাতিল করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ঠিকাদারদের বদলে সব বাঁধের কাজ স্থানীয় কৃষকদের সমন্বয়ে গঠিত পিআইসির মাধ্যমে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। আগে পাউবো কর্মকর্তা এ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। এভাবে কর্তৃত্ব খর্ব হওয়ায় পাউবো কর্মকর্তারা নাখোশ হয়ে উঠেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। কৃষকদের মতে, মূলত এ কারণেই পাউবো কর্মকর্তারা সংস্কারে নানা টালবাহানা করে সময় নষ্ট করছেন। পিআইসি বলছে, হাওরের পানি না নামায় বাঁধের কাজ শুরুতে দেরি হয়েছে। পাউবো ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকায় বাঁধ নির্মাণে দেরি হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণে দেরি এবং নির্মাণ কাজে ত্রুটির কারণে গত বছরের মার্চ-এপ্রিলে হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ মাঠের বোরো ফসল। সরকারি হিসাবেই ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমির বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়; যা থেকে চাল উৎপাদন হতে পারত প্রায় ১০ লাখ টন। পাশাপাশি ক্ষতি হয় মত্স্য ও প্রাণিসম্পদেরও। কর্মহীন হয়ে পড়ে অসংখ্য কৃষিশ্রমিক। চালের বাজার চড়ে যায় অস্বাভাবিক। সময়মতো বাঁধ নির্মিত না হলে এ বছরও বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। এ অবস্থা এড়াতে হাওর এলাকায় অসমাপ্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিতে হবে। টেকসই বাঁধ নির্মাণেও নজর থাকা বাঞ্ছনীয়। হাওর এলাকার বোরো ফসল যেহেতু দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে সেহেতু বাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর