মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

পকেটমার সন্দেহে নির্যাতন

আইন হাতে তুলে নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় পকেটমার সন্দেহে শফিকুল ইসলাম নামের এক যুবককে পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ফেসবুকে আপলোড করা হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে চারদিকের তীব্র সমালোচনার মুখে পুলিশ নির্যাতনের মূল হোতা নুরুন্নবী নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শফিকুল ইসলামকে প্রথমে দুই পা বাঁধেন এক ব্যক্তি। তারপর দুই পায়ের মধ্য দিয়ে বাঁশ ঢুকিয়ে দুজন সেই বাঁশ কাঁধে নিয়ে উল্টোভাবে তাকে ঝুঁলিয়ে রাখেন। কালো গেঞ্জি পরিহিত নুরুন্নবী লাঠি দিয়ে শফিকুলের পায়ের তালুতে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে শফিকুল নির্যাতনকারী নুরুন্নবীর পা জড়িয়ে ধরে আকুতি-মিনতি করলেও নির্যাতন অব্যাহত থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার ছিল উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের মধইল হাটের দিন। সেখানে শফিকুল একজনের পকেট মারেন— এমন সন্দেহে স্থানীয়রা তাকে উত্তমমধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু শফিকুলকে নুরুন্নবীসহ কয়েকজন মিলে ধরে নিয়ে যান এবং আকবরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উল্টো করে বাঁশে ঝুলিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালান। ভিডিওটি ফেসবুকে এক ব্যক্তি আপলোড করার পর রবিবার বিকালে মাঠে নামে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূল হোতা নুরুন্নবীকে আটক করা হয়েছে। তার কথার সূত্র ধরে শফিকুলকে সুরহট্টি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়। নওগাঁর পত্নীতলায় পকেটমার সন্দেহে আটক যুবককে আইনের হাতে তুলে না দিয়ে যেভাবে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আটক ব্যক্তি অপরাধী হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাকে পুলিশে তুলে দেওয়ার বদলে যারা নৃশংসভাবে প্রকাশ্যে নির্যাতন চালিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পুলিশ কেন দুই দিন দেরি করল তা একটি প্রশ্নের বিষয়। যারা আইন হাতে তুলে নেয় তারা নিঃসন্দেহে বড় ধরনের অপরাধী। চোর, ডাকাত, পকেটমার যে ধরনের অপরাধীই হোক না কেন, তাদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা আইন হাতে তুলে নেয়, তাদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ পত্নীতলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে— এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর