বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা

শোকাহত দেশের ১৬ কোটি মানুষ

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। চার ক্রুসহ বিমানটিতে ৭১ জন যাত্রী ছিলেন; যার অর্ধেকই বাংলাদেশি। স্বভাবতই দুর্ঘটনায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় সারা দেশে গভীর শোকের ছায়া বিস্তার করেছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। দেশের ১৬ কোটি মানুষও শোকাহত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সিঙ্গাপুর সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরটির ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে কুখ্যাতি রয়েছে। এ বিমানবন্দরে এ  পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে; যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৫০ জনের বেশি। নেপালের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা দুর্বলতা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সর্বশেষ দুর্ঘটনার জন্য তা অনেকাংশে দায়ী। হিমালয়দুহিতা নেপাল দুনিয়ার ভ্রমণপ্রিয় মানুষের স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের যাত্রীদের প্রায় সবাই নেপাল ভ্রমণের জন্যই বিমানে উঠেছিলেন। হূদয়ে তারা লালন করছিলেন হিমালয়কন্যাকে কাছ থেকে দেখার প্রত্যাশা। সে স্বপ্ন যে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা তারা ভুলেও ভাবেননি। যাত্রীর মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন নেপালের নাগরিক; যার একাংশ বাংলাদেশে পড়াশোনা করতেন। পরীক্ষা শেষে স্বজনদের কাছে ছুটে যাওয়ার সময় তাদের প্রাণ হারাতে হলো। আজকের যুগে যে কোনো যানবাহনের চেয়ে বিমান চলাচল অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। প্রতি বছর বিমানে কোটি কোটি যাত্রী ভ্রমণ করেন; সে তুলনায় দুর্ঘটনা সত্যিকার অর্থেই কম। তবে কোনো বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে যাত্রীদের প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনাও কম থাকে। দেশের ইতিহাসে কোনো বাংলাদেশি বিমানের এটিই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। ৩৪ বছর আগে খারাপ আবহাওয়ায় অবতরণের সময় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয় এবং তাতে প্রাণ হারান ৪৯ জন। ত্রিভুবনে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫০ ছাড়িয়েছে। আহতের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। আমরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য গভীর শোক জানাচ্ছি। আহতদের জন্য জানাচ্ছি সহানুভূতি। আল্লাহ নিহতদের স্বজনদের শোক সইবার শক্তি দিন। আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্যও তাঁর রহমত কামনা করছি।

সর্বশেষ খবর