শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইয়াবা আগ্রাসন

ওদের শক্ত হাতে ঠেকাতে হবে

রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাড়ি থেকে বুধবার ১ লাখ ২৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। একই দিন কামরাঙ্গীর চরে আবিষ্কৃত হয়েছে ইয়াবা তৈরির একটি গোপন কারখানা। দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই ধরা পড়ছে কোনো না কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ী। ধরা পড়ছে ভয়াবহ ক্ষতিকর এই মাদকের চালান। তার পরও ইয়াবা আগ্রাসনের অপ্রতিরোধ্য গতি কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না, যা একটি দুঃসংবাদ বলে অভিহিত হওয়ার যোগ্য। দেশের ৩২ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো কার্যত শাসন করছে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্রের সদস্যরা। তাদের সহায়তায় সীমান্ত এলাকার ৫১ পয়েন্ট দিয়ে পাচার হয়ে আসছে হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের মাদক। মাদক সিন্ডিকেটের জালের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পেরে উঠছে না মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যদের সঙ্গে। মাদকের ডেরায় অভিযান চালালেই তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। অগাধ অর্থের মালিক মাদক সিন্ডিকেট সদস্যদের পেছনে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতা থাকায় তাদের শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মীরাও জড়িয়ে পড়ছে মাদক পাচার ও বিপণনের সঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতা থাকায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী তাদের কাছে পাত্তা পাচ্ছে না। বিজিবি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মাঠ পর্যায়ের লোকজন ধরা পড়লেও মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। যারা ধরা পড়ছে, তারাও আবার আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে। মাদক আগ্রাসনের টুঁটি চেপে ধরতে হলে এর রাজনৈতিক কানেকশনের অবসান ঘটাতে হবে। প্রশাসনের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সম্পর্কে বাদ সাধতে হবে। মাদক পাচারের মামলায় কেউ গ্রেফতার হলে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে যাতে বেরিয়ে আসতে না পারে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর