শিরোনাম
রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

উন্নয়নশীল বাংলাদেশ

স্বল্পোন্নত থাকার লজ্জা এখন অতীত

স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত’ দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার মর্যাদা দিল জাতিসংঘ। এ স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চকে। এ সাফল্য উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার জন্য বাংলাদেশকে এ সংক্রান্ত তিন শর্ত পূরণ করতে হয়েছে। এই তিন শর্ত হলো— দেশবাসীর মাথাপিছু বার্ষিক আয় তিন বছরের গড় হিসেবে ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়া। বাংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ১০০-এর মধ্যে ৬৬ বা তার বেশি অর্জন করা, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ৭০। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ বা তার নিচে থাকা, বাংলাদেশের অবস্থান ২৫.০৩-এ। শর্ত পূরণ হওয়ায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা—এলডিসির তকমা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ গতকাল ১৭ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার স্বীকৃতিপত্র প্রদান করেছে। এই পত্র ২২ মার্চ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হবে। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। স্মর্তব্য, ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের গ্রুপ এলডিসিতে স্বাধীনতার পরপরই সদস্য হয় বাংলাদেশ। এই গ্রুপের সদস্য দেশগুলো গরিব দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহল থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা পায়। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলের সে দয়া-দাক্ষিণ্য হারাবে। তবে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরও বাংলাদেশ আগামী ছয় বছর স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা পাবে। এ সময়ে বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়া বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট অর্জন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এখন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অংশীদার বলে ভাববে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগও উৎসাহিত হবে।  বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য। সে লক্ষ্য অর্জনে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে আসা বড় এক সাফল্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর