সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

মধ্য রাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে কেন?

কামাল লোহানী

মধ্য রাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে কেন?

স্বতঃস্ফূর্ত একুশে প্রভাত কেন এভাবে পাল্টে গেল? ১৯৫২ সালে আমরা তখনো এমনকি আজও ব্রিটিশ রাজশক্তির চাপিয়ে দেওয়া বর্ষপঞ্জি মেনেই জীবনযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। ব্রিটিশের পর মুসলিম লিগের পাকিস্তানে অবকাঠামো অথবা রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন না এনে প্রভুদেরই অনুসরণ করা হয়েছে। তখন অবশ্য আরবি-হিজরিকে নিজেদের জীবনযাত্রায় সংযোজিত করা হয়। বাংলায় প্রচলিত বর্ষপরিক্রমাকে আমরাও তেমনভাবে ব্যবহার করতে পারিনি, অনেকটা ‘ধর্মান্ধতার’ কারণে। আরবিকে ‘কোরানিক ভাষা’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল বলে হিজরি সন চালু করেছিল পাকিস্তানিরা। অথচ বাংলা ভাষাকেই নিঃগৃহীত করার অপপ্রয়াসে যখন মুসলিম লিগের রাজনীতি মত্ত তখন ক্ষমতাদম্ভে। তারা তো পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বাসস্থান এবং জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা বাংলাকেই অস্বীকার অবহেলা এবং অবমাননা করতে যখন দাম্ভিক ঘোষণা দিচ্ছে—একমাত্র উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে। সেখানে বাংলা পাত্তা পায়নি ক্ষমতাধরদের ঈর্ষাকাতর মানসিকতায়। কিন্তু তারপরও আমরা যখন রাষ্ট্রভাষার দাবিতে সংগ্রামে উদ্দীপ্ত, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে প্রবলভাবে সংগঠিত উদ্ধৃত রাজশক্তির বিরুদ্ধে, মুসলিম লিগের পাকিস্তানি দুঃশাসন শুরুর লগ্ন থেকেই। বাঁধল লড়াই। এ লড়াই রক্ত ঝরানো বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রসমাজের প্রবল প্রতিরোধে অপশক্তির নৃশংসতায় পুলিশ আর মিলিটারি পড়ন্ত দুপুরে গুলি, কাঁদুনে গ্যাস, লাঠি চলল বেধড়ক; তখনই শহীদ হলেন প্রথমে রফিক। গুলি মেরে নিষ্ঠুর-নির্মম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিয়েছিল তার। তারপর জব্বার, বরকত, তারও পর সালাম শহীদ হয়েছিলেন। কত যে লাশ গুম হয়েছিল তা তো আমরা জানি না। ৬৬ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সরকার অনুসন্ধান চালায়নি। এমনকি একুশের চেতনায় মুক্তি-সংগ্রামের সূচনার কথা মুখে বললেও মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে ৪৭ বছর পার করে দিলাম, আমরা ব্যর্থ হয়েছি শহীদের সংখ্যা নিরূপণে।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতিসত্তার উদ্দাম বহির্প্রকাশের আর প্রাণ বিসর্জনের নিঃশঙ্কচিত্ত একটি মহান দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে। এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে মহীয়ান সংগ্রামের একুশে যে ভাষাশহীদ ও সংগ্রামীদের স্মরণীয় অধ্যায়। তাই পরের বছর ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রভাতে পাড়া-মহল্লা থেকে স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা আর মাতৃভাষার প্রতি আত্মোৎসর্গের মুহূর্ত, দিনক্ষণ ও ইতিহাসকে স্মরণ করতে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রতি সকালে সারা রাত ফুলের মালা গেঁথে ছেলেমেয়ে, জোয়ান-বুড়ো সবাই নগ্নপদে আসতেন শ্রদ্ধা জানাতে। প্রথম আজিমপুর কবরস্থানে তারপর শহীদমিনারে আসতেন আপামর জনসাধারণ। কারণ বাংলামতে দিনের সূচনা হয় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। তাই সারা রাতের আন্তরিকতা আর আনুগত্যে যে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান হতো এবং ‘ভুলব না ভুলব না একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলব না’, কিংবা ‘মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল ভাষা বাঁচাবার তরে, আজিকে স্মরণীয় তারে’ গান গেয়ে শহরের সব প্রান্ত থেকে প্রভাত ফেরি বেরুত সব মানুষকে জাগিয়ে দিতে। বাঙালির প্রচলিত রীতি অনুসরণ করেই এই আচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চলছিল পাকিস্তান আমলেও। ছিল এই রীতি মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশেও। এ কেবল শহরেই নয়, রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে মফস্বলের সব শহর হয়ে গ্রামাঞ্চলেও একই রীতিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো। কেন এই প্রচলিত ধারাকে ভেঙে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থেকেও বাংলা বর্ষপঞ্জির বিপরীতে ইংরেজিতে ক্যালেন্ডারের মধ্য রাতে এটাকে পরিবর্তন করল? এখানে উল্লেখ্য, ১৯৭২-এর ফেব্রুয়ারি মাসে এই মহান শহীদ দিবসে আজিমপুর কবরস্থান এবং শহীদমিনারে যে অগণিত মিছিল পাড়া-মহল্লা থেকে আসত নগ্নপদে, ফুল হাতে, একুশে প্রভাতের এই দৃশ্যকে বাংলাদেশসহ সব বাঙালির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রথম সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয় বাংলাদেশ বেতারে এই দিন থেকেই। এ সময় বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতারের চরমপত্র-খ্যাত এম আর আকতার মুকুল দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ বেতারের সকল কেন্দ্র থেকে একুশের সকালের এই সরাসরি সম্প্রচার চালানো হবে।’ মনে পড়ে আজিমপুর কলোনির বেবী আইসক্রিম মোড়ে একুশের সকালের প্রথম প্রহরে আউটসাইড ব্রককাস্ট (ওবি) বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হালিম সর্দার সম্প্রচারের সব যন্ত্রপাতি স্থাপন করে এই ঐতিহাসিক ঘটনাটির সূত্রপাত করেছিলেন। দুটি পয়েন্ট ছিল, একটি আজিমপুরে আরেকটি নিউমার্কেট মোড়ে। আজিমপুরের মূল কেন্দ্রে ধারা বর্ণনায় ছিলাম আমি, আমার সহকারী আশফাকুর রহমান খান ও মহাপরিচালক এম আর আকতার মুকুল আর নিউমার্কেটে ছিলেন আশরাফুল আলম। আমাদের প্রস্তুতি ছিল, আজিমপুর কবরস্থান থেকে চলমান জনস্রোতের বিবরণ শেষ করে চলে যাব কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং সেখান থেকে মধ্যদুপুর পর্যন্ত এই সম্প্রচার অব্যাহত থাকবে। ১৯৭৩-এ আমি বেতার ছেড়ে সংবাদপত্রে যোগ দেওয়ার পরও আমাকে ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। সে দিনের ধারাভাষ্য প্রভাত থেকেই শহীদ মিনারে শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর সকাল ১০টা-১১টার দিকে তৎকালীন ছাত্রলীগের মধ্যে বিরোধীয় দুটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মিছিল এবং পরস্পরকে আক্রমণ করে দেওয়া স্লোগান এমন একপর্যায়ে পৌঁছল যে, রাষ্ট্রীয় পবিত্রতার খাতিরে সে দিনের বেতার সম্প্রচার তাত্ক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংস-নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এক নারকীয় যজ্ঞে।

তারপর জেনারেল জিয়াউর রহমান এসেছিলেন ক্ষমতায় কর্নেল তাহেরের বদৌলতে। অথচ তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জেনারেল জিয়া নিজের আসনকে নিষ্কণ্টক মনে করলেও তার শাসন মেয়াদে, শোনা যায়, ১৭টি ছোট-বড় সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল। তাই শহীদ মিনার নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে জিয়া হত্যার মাধ্যমে যখন জেনারেল এইচ এম এরশাদ সুকৌশলে ক্ষমতায় এলেন, তখন তার কীর্তিকলাপ ঢেকে রাখার মানসে একুশে ফেব্রুয়ারি আসার আগেই শহীদ মিনার চত্বরকে পুনঃসংস্কার করে, এটি উদ্বোধনের সাধ জেগেছিল মনে। এই সেনাশাসক তার স্বৈরাচারকে আড়াল করার জন্য শুনেছি কবিতা লিখতেন। যদিও প্রচার রয়েছে কবিতাগুলো রাজ আমলারা লিখে দিতেন। জেনারেল এরশাদ বাংলা ভাষাপ্রীতি দেখিয়ে আন্তনগর ট্রেন যখন চালু করলেন তখন ট্রেনের নাম বাংলায় রাখলেন এবং কিছু নতুন রাস্তার নামকরণ করলেন বাংলায় এবং কয়েকটি সরকারি বাসভবনের নামও বাংলায় রাখলেন। অথচ এত প্রীতি সত্ত্বেও ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত একুশে ফেব্রুয়ারির শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজনকে ইংরেজদের মতোই মধ্য রাতে চালু রাখলেন। জানি না হয়তোবা সংস্কারকৃত শহীদ মিনার উদ্বোধনের যে স্বাদ তার মনে ছিল তা ভেস্তে গেল সংযুক্ত একুশে উদযাপন কমিটির অনুষ্ঠানমালার সময়। অনুষ্ঠান শুরু হবে গাজীউল হক, ফয়েজ আহম্মেদসহ আমরা সবাই মিনার চত্বরে বসেছি, এরপরই ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এমনই সময় চোখ পড়ল বাংলার প্রখ্যাত গণগায়ক শেখ লুত্ফর রহমান ক্র্যাচে ভর দিয়ে মিনারের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠছেন। তখনই আমার মাথায় বুদ্ধি এলো এবং ফয়েজ আহম্মেদকে বললাম, ‘জেনারেল এরশাদ মিনারটিকে সংস্কার করেছে নতুন করে উদ্বোধন করার জন্য। আমরা কেন শেখ লুত্ফর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে দিই না।’ প্রস্তাবটি সবাই গ্রহণ করলেন এবং ফুলের স্তবক নিয়ে লুত্ফর ভাইকে সামনে দিয়ে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে, এরশাদের উদ্বোধন করার সাধ মিটিয়ে দিলাম। নব্বইয়ের দশকে প্রথম দিকে দেশব্যাপী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এক প্রচণ্ড রূপ ধারণ করল। দিন নেই রাত নেই শহরে শহরে স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী বিক্ষোভের প্রচণ্ড গর্জন। অবশেষে পতন হলো স্বৈরাচারের। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহম্মেদের নেতৃত্বে গঠিত হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এরপরের রাজনৈতিক ইতিহাস বড়ই ঘোলাটে। তত্ত্বাবধায়কের পর নির্বাচনে বিএনপি প্রথম ক্ষমতাসীন হলো। তার পরের নির্বাচনে এলো আওয়ামী লীগ। এমনিভাবে চলতে চলতে আধা-সামরিক শাসনের পাল্লায় পড়লাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আড়ালে।

এ যাবৎকাল ৪৬ বছর পেরিয়ে আমরা যখন ৪৭-শে পা দিলাম, তখনো দেখছি অনবরত প্রতি বছর ওই মধ্য রাতে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আত্মাহুতি দেওয়া ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছি। ইতিমধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে এবং প্রায় ২০০টি দেশ এই দিবসটি নিজ নিজ দেশীয় রীতি অনুযায়ী পালন করে চলেছে। কিন্তু আমরা বাংলা দিনপঞ্জির নতুন দিনের সূচনার সূর্যোদয়ের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন না করে কি তাদের প্রতি অবমাননাই প্রদর্শন করছি না? রক্তাক্ত একুশের ৬৬ বছর হয়ে গেল এবং বিগত নয় বছর ধরে মুক্তিযুুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ ১৪-দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকাসত্ত্বেও কেন আজও মানুষে স্বতঃস্ফূর্ততায় প্রবর্তিত দেশীয় রীতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অনুসরণ করা হচ্ছে না।

ভাষা শহীদদের অন্যতম দাবি ছিল সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করার। কিন্তু সে ব্যাপারেও আমরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। ঘর-বাড়ি, দোকানপাট, রাস্তাঘাট, অফিস-আদালতে আজও বাংলা ভাষাকে পুরোপুরি প্রচলন করতে পারেনি। যেমন পারেনি এত বছর ধরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের স্থান এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করতে। ভাস্কর নভেরা আহমেদ ও শিল্পী হামিদুর রহমানের সেই শহীদ মিনার এবং তার সঙ্গে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, গ্রন্থাগার ও পাঠগৃহ এখনো কিন্তু শহীদ মিনার চত্বরের নিচে চাপা পড়ে আছে। ১৯৭১ সালে এই শহীদ মিনারটিকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছুদিনের মধ্যেই সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য চটজলদি একটি শহীদ মিনার দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৪২ বছরেও সেটিকে পূর্ণাঙ্গ করতে কেন কোনো সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, তা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যখন ক্ষমতায় তখন কেন এটা পূর্ণাঙ্গতা লাভ করবে না। আমাদের দাবি সূর্যোদয়ের রক্তিম আভায় স্নাত হোক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আর সেখানেই প্রত্যুষে ছুটে আসুক শহরবাসী শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।

সেই সঙ্গে এর পবিত্রতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিই সরকারকে। এমন খোলামেলা স্মৃতির মিনারে যখন ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অজানা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, সেখানে অসামাজিক, অপ্রীতিকর এবং অনাকাঙ্ক্ষিত যেসব ঘটনা প্রতি মুহূর্তে ঘটছে, তাতে কি আদৌ ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে—নাকি লৌকিকতাই আমরা সবাই মেনে নিয়েছি? এ ব্যাপারে তো উচ্চ আদালতেরও রায় রয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা নিতে না পেরে, শুধু ভাষা শহীদদের নয়, আদালত অবমননাও করছি না কি? আমাদের প্রস্তাব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এই ১৪-দলীয় সরকার বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালনের আগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করুন এবং এর পবিত্রতা রক্ষায় যা কিছু প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিন। তবে নির্দেশ দিলেই চলবে না, তাকে বাস্তবায়নের জন্য সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।          

 

            লেখক : প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

সর্বশেষ খবর