সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

নামাজ কায়েমের জন্য ইমাম মুসল্লির কমিটি

আল্লামা মাহ্মূদুল হাসান

নামাজ কায়েম কর। নামাজ কায়েমের অর্থ হলো নিজের নামাজ পড়ার পরে তোমাদের মধ্যে কারা নামাজ পড়ে না, তাদের নামাজের দাওয়াত দাও। যারা তাবলিগে যায় তারা উসুলে কাজ করবে, যারা দাওয়াতুল হক করে, তারা দাওয়াতুল হকের উসুলে কাজ করবে, আর মসজিদের মধ্যে অনেক মানুষ থাকে যারা বাইরে যেতে পারে না। বয়স্ক বা অন্য কোনো কারণে তাবলিগে সময় দিতে পারে না বা দাওয়াতুল হকেও সময় দিতে পারে না; কিন্তু মসজিদের আশপাশে থাকে, যাতায়াত করে, তাদেরও কিছু কাজ করা উচিত। এ জন্য আমি যেখানেই যাই মসজিদের একটা ইমাম-মুসল্লীয় কমিটি বানানোর কথা বলি। এর জন্য যুবক-বৃদ্ধ বিশ-ত্রিশ জনের মতো থাকবে। তাদের বড় কাজ হলো নিজেরাও নামাজ পড়বে আর সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন যারা নামাজ পড়ে না তাদের লিস্ট নিয়ে মসজিদে জমা হয়ে, দোয়া করে বাহির হবে এলাকা বা মহল্লার মধ্যে। যারা মুসলমান অথচ নামাজ পড়ে না তাদের হাতে ধরে, পায়ে ধরে ভাই ডেকে, মিষ্টি খাওয়ায়ে, চা খাওয়ায়ে যেমনে পারি এর পেছনে মেহনত করে তাদের নিয়ে আসা। তারা আমাদের ভাই, আমাদের চাচা না হয় দাদা কিংবা আমাদের সাথী, তারা নামাজ পড়ে না। এ যে কত বড় অন্যায়। যত কিছু ভালো কাজ করুক একশবার হজ করে আসুক, দান-খয়রাত করুক, যা মন চায় তাই করুক যদি নামাজ না পড়ে জান্নাতে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। তুমি একা জান্নাতে যাবে, তোমার বিবি, তোমার ছেলে জাহান্নামে যাবে, তোমার বন্ধু জাহান্নামে যাবে, তোমার পরশী জাহান্নামে যাবে তাহলে তোমার শান্তি কী করে হবে। সুতরাং আমি নামাজ পড়ি তো আমার চেষ্টা থাকতে হবে এলাকার যারা বেনামাজি তাদের হাতে-পায়ে ধরে যেভাবে হোক নামাজি বানানো। এটা হলো প্রকৃত পক্ষে উম্মতে রসুলের দাওয়াত, আল্লাহ খাঁটি বান্দার দাওয়াত। তাই প্রথমে জুমার নামাজ ধরাব, এরপর শুধু এক ওয়াক্ত নামাজ। এই রকম করে করে পুরো নামাজি বানানো। সপ্তাহে এক দিন এক ঘণ্টা আসরের নামাজ থেকে মাগরিবের নামাজ পর্যন্ত শুধু গাশত করে তাদের নামাজের জন্য ডাকবে আর কোনো কাজ নেই। এরা একটা কাজ করবে যারা নামাজ পড়ে না বেনামাজির কারণে তাকে ঘৃণা নয়, ধমক নয়, আদর-যত্ন করে মহব্বতের সঙ্গে মসজিদের দিকে আনতে হবে। বোখারি শরিফের হাদিসে ইঙ্গিত আছে অন্য হাদিসেও আছে, যারা এই কাজটা করবে এদের হাশরের বিচার থেকে মুক্ত করে আল্লাহতায়ালা জান্নাত দিয়ে দেবেন। অন্যথায় আল্লাহর কাছে প্রায়শ্চিত্তে ভুগতে হবে। কারণ নিজে আমলে করেছ, কিন্তু অন্যকে আমলের জন্য বলনি কেন, এ জন্য আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর