মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেসরকারি খাতের সাফল্য

এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে

দুনিয়ার যেসব দেশ শিল্পায়নে এগিয়ে যাওয়ার সাফল্য দেখিয়েছে, তা সম্ভব হয়েছে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। শিল্প ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে কয়েক বছর ধরে, তাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন দেশের বেসরকারি উদ্যোক্তারা। চট্টগ্রামে দেশের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল শোধনাগার প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সীতাকুণ্ডে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে দেশের জ্বালানি চাহিদার ৮০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই শিল্পগোষ্ঠী স্থাপন করেছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাগজ কারখানা। বসুন্ধরা পেপার মিলসের উন্নতমানের কাগজ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। চিনি পরিশোধনেও এগিয়ে রয়েছেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারা এখন পরিশোধিত চিনি বিদেশে রপ্তানি করতে চাইছেন। শুধু পাট, কাগজ বা চিনি নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রেই এখন বেসরকারি খাতের আধিপত্য। বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বস্ত্র ও পোশাকশিল্প গত কয়েক দশকে অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি সিমেন্ট, ওষুধ, চামড়া, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের সাফল্য শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বিশ্বের মোট পোশাক সরবরাহের দ্বিতীয় শীর্ষ উৎস বাংলাদেশ। জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের সাফল্য সত্যিকার অর্থেই গর্ব করার মতো। বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ জার্মানির মতো ইউরোপীয় দেশেও রপ্তানি হয়েছে। দেশেই তৈরি হচ্ছে যুদ্ধজাহাজ। বাংলাদেশের চামড়াশিল্প আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে উন্নত দেশগুলোতেও। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে দুনিয়ার বহু দেশে। ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের উত্থান রূপকথার মতো। যে দেশ স্বাধীনতা লাভের সময় ওষুধের জন্য প্রায় শতভাগ ছিল পরনির্ভরশীল, সে দেশের ওষুধ এখন রপ্তানি হচ্ছে পৃথিবীর ১২৭ দেশে। ওষুধের মানের ব্যাপারে যে দেশগুলো আপসহীন হিসেবে পরিচিত, সেই ইউরোপ, আমেরিকায়ও রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। শিল্পের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ জোগাতে হবে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মতো ইন্ধনশক্তির সহজ জোগান নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর