সোমবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনে যে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

নির্বাচনে যে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষ মনে করেছিল ব্রিটিশদের তাড়িয়ে নিজ ভূমিতে তারা স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু মাত্র ৭ মাস ৯ দিনের মাথায় ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স (বর্তমান সোহ্রাওয়ার্দী) ময়দানে জিন্নাহ কর্তৃক উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার মাধ্যমে বাঙালি বুঝতে পারে তাদের ভূমি নতুন শত্রুর দ্বারা দখল হয়ে গেছে। তখন থেকেই বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের শুরু। সেই ধারাবাহিকতায় গত শতকের ষাট দশকের মধ্যভাগে এই সংগ্রামের শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ষাট দশকের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেন নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক কৌশলের ধারাবাহিকতায় সঠিক ও পরিপক্ব সময়ে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে প্রথমে স্বাধীনতা প্রাপ্তি এবং তারপর স্বাধীনতার সোপানের ওপর দাঁড়িয়ে, বাঙালি জাতিকে অর্থপূর্ণ মুক্তির পথে পুনরায় নতুন করে সংগ্রাম করতে হবে। বঙ্গবন্ধু জানতেন স্বাধীনতা অর্জন যত কঠিন হবে, তার চেয়ে বেশি কঠিন হবে মুক্তি অর্জনের পথ। আসন্ন স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজ জীবনের যে কোনো পরিণতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন বলেই একাত্তরের ৭ মার্চের ভাষণের শেষ দিকে তার চূড়ান্ত লক্ষ্যের কথা বাংলার মানুষকে জানিয়ে দিলেন। বললেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। স্বাধীনতার সংগ্রাম বলেই তিনি থেমে যেতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। অত্যন্ত সচেতন মনেই বাংলার মানুষকে বলে দিলেন স্বাধীনতা অর্জনে সংগ্রামের শেষ হবে না। মুক্তির জন্য নতুন করে সংগ্রাম চালাতে হবে। তাই দেখা যায়, স্বাধীনতার পর প্রথম রচিত সংবিধানে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিলেন। সংবিধানের প্রথম দুই লাইনে প্রস্তাবনার মধ্যে লিপিবদ্ধ হলো, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি।’ অর্থাৎ আদর্শগত মুক্তি অর্জনই ছিল স্বাধীনতার চূড়ান্ত লক্ষ্য, যা সংবিধানের শুরুতে উল্লিখিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পরে প্রথম সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক আদেশ বলে এই সুনির্দিষ্ট মুক্তির লক্ষ্যকে সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে দেন। লক্ষ্যে অটুট না থাকলে যা হয়, পুরো জাতি বিভ্রান্তিতে ডুবে যায়। সে বিভ্রান্তি এখনো কাটেনি বলেই সংবিধান ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে উপেক্ষা করেও বাংলাদেশে রাজনীতি করা যাচ্ছে, সব নাগরিক সুবিধা পাওয়া যায় এবং সব শ্রেণি পেশাসহ জনগণের একটা অংশের সমর্থনও পাওয়া যায়। কি বিচিত্র যা বিশ্বে বিরল। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু মুক্তিসংগ্রামের কথাটির ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, স্বাধীনতা তো আমরা ১৯৪৭ সালেও পেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে বাংলার জনগণের মুক্তি মেলেনি। তখন ব্রিটিশ শাসকদের পরিবর্তে পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাবি শাসকরা আমাদের মাথার ওপর এসে বসেছিল। তাই স্বাধীন বাংলাদেশে স্বদেশি শোষক ও শাসকরা যেন জনগণকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দাবিয়ে রাখতে না পারে তার জন্য প্রকৃত মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মুক্তির স্বরূপ কেমন হবে এবং তা অর্জনের জন্য কোন পথে চলতে হবে, সেগুলো অত্যন্ত দূরদৃষ্টির সঙ্গে সুনিপুণভাবে বাহাত্তরের সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের পরে সামরিক শাসকদ্বয় সেগুলোর কিছুই রাখলেন না।

বঙ্গবন্ধু জানতেন আকাঙ্ক্ষিত মুক্তি আনতে হলে যে পথ ও কর্মসূচি দরকার তা রচিত হবে রাজনীতির হাত ধরে। কারণ, রাজনীতি হচ্ছে সব নীতির মাথা। এই মাথার পচন ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী যুগে যুগে সংঘটিত উত্থান-পতনের ঐতিহাসিক শিক্ষার হাত ধরে বঙ্গবন্ধু রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করে সেটি সসম্মানে প্রতিষ্ঠিত করলেন। চতুর্দশ শতাব্দীর শুরু থেকে রেনেসাঁ ও তারপর এনলাইটেন্টমেন্ট বা আলোচিত পথের হাত ধরে রাষ্ট্র পরিচালনায় ইউরোপ প্রায় এক হাজার বছরের ধর্মতান্ত্রিকতার কবল থেকে মুক্ত হতে পেরেছিল বলেই তারা পরবর্তীতে বিশ্বের নেতৃত্বের জায়গায় চলে আসতে সক্ষম হয়। বর্তমান সময়ে আমাদের মুসলিম ব্রাদা রেন পাকিস্তানের জন্মের পর থেকে অদ্যাবধি ঘটনাপ্রবাহের দিকে তাকালে স্পষ্ট হয় রাজনীতি আর ধর্ম মিশ্রিত করলে তার পরিণতি কী হয়। মোল্লা ও মিলিটারির কবলে পড়ে পাকিস্তানের অবশিষ্ট যা আছে তাও আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা এবং অসামান্য দূরদৃষ্টির দ্বারা রাজনীতি ও ধর্মের সংমিশ্রণের ভয়াবহতা গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন বলেই তিনি বাহাত্তরের সংবিধানে এই মিশ্রণ রোধের ব্যবস্থা রেখেছিলেন এবং তার জন্য সংবিধানের ভিতরেই শক্তিশালী রক্ষাকবচ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। কিন্তু যাত্রা শুরু করে বঙ্গবন্ধু বেশিদূর এগোতে পারলেন না। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনের বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনার জন্য যে ওয়ার্কফোর্সের দরকার ছিল তা বঙ্গবন্ধুর প্রশাসনে ছিল না বলা চলে। গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও প্রতিরক্ষাসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র যে কর্মচারী-কর্মকর্তা তাদের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্সিত এবং যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে বসে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সঙ্গে কর্মরত। তাদের মানসতন্ত্রে সব সময় কাজ করেছে এদেশে অবস্থান করে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে যোগদান না করে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার অপরাধী মনের অস্থিরতা এবং কাপুরুষোচিত ঈর্ষাপরায়ণতা। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত একটা সদ্য স্বাধীন দেশে গণমানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য যে মনস্তাত্ত্বিকতা ও ত্যাগের মানসিকতা দরকার হয় তা ওইসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ছিল না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ স্পর্শকাতর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরাও ছিলেন উপরোক্ত মনমানসিকতা সম্পন্ন। প্রশাসনের অভ্যন্তরে এ রকম একটি নেতিবাচক পরিবেশের সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শুরু হয় চরম হঠকারিতা। দেশের বাইরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াতের আমির গোলাম আযম লন্ডনে শুরু করে পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলন। এভাবেই দেশের ভিতর ও বাইরের ষড়যন্ত্রের মুখে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হন। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় একাত্তরের পরাজিত শক্তি। তারপর পর্যায়ক্রমে দুই সামরিক শাসক ও তাদের থেকে জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো পাকিস্তানের মোল্লা ও মিলিটারিতন্ত্রের সব চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। ফলে সমগ্র জাতি বিভাজিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তি হিসেবে। সামরিক শাসকদের হাত ধরে রাজনীতিতে ধর্ম ঢুকে পড়ায় মানুষ ধর্ম ও রাজনীতি দুটো নিয়েই ভয়ানক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গেছে। এই বিভ্রান্তির সুযোগে অস্ত্র ও কালো টাকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে রাজনীতি। আরেক পক্ষ পবিত্র ধর্মকে অপব্যবহার করছে। ফলে রাজনীতিতে নীতি ও আদর্শের জায়গা সংকুচিত। এই সুযোগে একশ্রেণির মুখোশধারী তথাকথিত নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধী পক্ষকে এক পাল্লায় ওজন করার অজুহাত পাচ্ছে। একই কারণে ধর্মের নামে জোট বেঁধেছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত ও সামরিক শাসকপ্রসূত রাজনৈতিক পক্ষ। ফলে যে জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম ও যুদ্ধ সেই মুক্তি অর্জনের পথে ওই সম্মিলিত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এক সময় ক্ষমতায় ছিল। যার কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, মিডিয়া, শিক্ষাঙ্গনসহ রাষ্ট্রের সর্বত্র তাদের রাজনীতির মাধ্যমে বিশাল এক সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে। এই গোষ্ঠীর কালো টাকা, শক্তিশালী প্রোপাগান্ডা মেশিন ও ধর্মান্ধদের ধর্মীয় মিথ্যাচারের কাছে সাধারণ ভোটাররা জিম্মি হয়ে পড়েছে। তার পরিণীতিতেই দেখা যায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারী, ধর্ষণকারীও নির্বাচনে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে আসে, মন্ত্রী হয়, জাতীয় পতাকা গাড়িতে উড়ায় এবং সেই জাতীয় পতাকাকেই আবার তারা অসম্মান করে। এসবের চরম বহির্প্রকাশ বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে ২০০১-২০০৬ মেয়াদের সরকারের সময়। জঙ্গি গোষ্ঠীর বড় দুই রাজনৈতিক গুরু তখন মন্ত্রী থাকাতে ধর্মান্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর ব্যাপক উত্থান ও বিস্তার ঘটে। পুলিশের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে জঙ্গিরা রাষ্ট্রের আদালতের ওপর একাধিকবার গ্রেনেড বোমা আক্রমণ চালায়। তাতে নিহত হন বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ। তখন রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইকে ও তার দলবলকে প্রকাশ্য দিবালোকে অভ্যর্থনা জানায়। অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্র ও জঙ্গি গোষ্ঠী একাকার হয়ে যায়। পরিণতিতে জঙ্গিরা সহজে প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার ব্যক্তিসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ওপর একের পর এক গ্রেনেড-বোমা আক্রমণ চালাতে থাকে, যার চরম বহির্প্রকাশ ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। বিদেশি রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত রক্ষা পায় না। ওই সময়ে বিশ্বের বড় বড় বিশ্লেষকের মন্তব্য ছিল— বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে পরবর্তী আফগানিস্তান। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের ওই সময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার আইএসআই পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্যাম্প করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সব ধরনের সহায়তা ও সমর্থন দিতে থাকে। তারই অংশ হিসেবে চোরাইপথে সেখানে অস্ত্র পাচারের সময় ১০ ট্রাকের একটি চালান চট্টগ্রামে ধরা পড়ে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল, যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন তখনকার জামায়াত-বিএনপি সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সুতরাং যে বিষয়টি সুস্পষ্ট তা হলো, ১৯৭৫ সালের অব্যবহিত পর আবির্ভূত রাজনৈতিক পক্ষ ও একাত্তরের পরাজিত শক্তি মিলে বাংলাদেশ নামের খোলসে আরেকটি পাকিস্তান বানানোর প্রচেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানিকরণের বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শপ্রসূত মুক্তি লাভের সংগ্রামটা পুনরায় নতুন করে শুরু হয় ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ  হাসিনা দেশে ফেরত আসার পর তার নেতৃত্বে। সে কারণেই ওই অপশক্তি শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে, যার ভয়ঙ্কর উদাহরণ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। কিন্তু পিতার মতো মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে গত ৯ বছর তিনি একটানা দেশের নেতৃত্বে থাকায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামসহ বিশ্বের নামকরা সব গবেষণা ও জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখছেন। জঙ্গি সন্ত্রাস দমনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ এখন উদাহরণ। আমাদের এখন আর কেউ পরবর্তী আফগানিস্তান বলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির কারণে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি একটা টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের অপরাজনীতি থেকে গত তিন-সাড়ে তিন বছর মানুষ মুক্ত আছে। সুতরাং গত ৯ বছরে রাজনীতি-অর্থনীতিসহ রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে অগ্রগতি অনেক। কিন্তু যাত্রা পথ অসমাপ্ত। চূড়ান্ত মুক্তি অর্জনের পথে যেতে হবে আরও অনেক দূর। এই যাত্রাপথে আরেকটি ব্যাটল এখন আসন্ন, আগামী জাতীয় নির্বাচন। এই ব্যাটল দুটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পক্ষের স্বাভাবিক নির্বাচনী যুদ্ধ নয়। এটা হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিপক্ষের লড়াই। সুতরাং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে।

            লেখক : কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর