শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনা

সমন্বয়হীনতার ইতি ঘটুক

সমস্যা আর অব্যবস্থাপনার সমার্থক শব্দে পরিণত হতে চলেছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অব্যবস্থাপনার দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার অকাম্য কসরতে লিপ্ত এ বিমানবন্দরের কর্তাব্যক্তিরা। মশা, ইঁদুরের উত্পাত, ভাঙাচোরা টয়লেট, লাগেজ খোয়া যাওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগে বিবর্ণ হয়ে উঠছে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভাবমূর্তি। বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার জন্য সমন্বয়হীনতাকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা। বিমানবন্দরে ২৪টি সংস্থা কাজ করলেও তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় নেই। সংস্থাগুলো সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে দায়বদ্ধও নয়। তাদের কাজের গাফিলতি বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। সেন্ট্রাল চেইন অব কমান্ড না থাকায় সবকিছুতেই ধরা পড়ে অব্যবস্থাপনার ছাপ। পৃথিবীর সব দেশে বিমানবন্দরের সার্বিক দেখভাল ও সিদ্ধান্তের ক্ষমতা থাকে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের হাতে। বিমানবন্দরে কর্মরত যে কোনো এজেন্সির কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ধরনের নিয়ন্ত্রক কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। প্রতিদিনই দেশের বৃহত্তম এই বিমানবন্দরে যাত্রী বাড়ছে। বেড়েই চলেছে ফ্লাইট অপারেশন। বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনায় চলছে সীমাহীন গলদ। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে অ্যাডহক ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নিয়ে মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও সেদিকে কারও নজর নেই। শুধু বিমানবন্দর নয়, বিমান চলাচল খাতও অব্যবস্থাপনার শিকার। ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। যে দেশের ১ কোটি মানুষ বিদেশে কর্মরত। বছরে প্রায় দেড় লাখ মানুষ হজ ও ওমরাহ উপলক্ষে বিমানে যাতায়াত করেন। অথচ এ দেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দেশের সব বেসরকারি বিমান সংস্থা লাভ করলেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার পরও বিমানের ভাগ্যে লোকসান নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ বিমানমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করতে হয়েছে। শাহজালালে যাত্রীসেবার বালাই আছে কিনা তা নিয়ে প্রায়ই সংশয় সৃষ্টি হয়। যাত্রী হয়রানির দিক থেকে শাহজালালে যেভাবে রেকর্ড করার পাঁয়তারা চলছে তা দুর্ভাগ্যজনক। জাতীয় সুনামের স্বার্থেই এ অব্যবস্থার ইতি ঘটাতে হবে। সমন্বয়হীনতার ইতি ঘটানোও জরুরি।

 

সর্বশেষ খবর