বুধবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাসে যৌন হয়রানি

বাসচালক ও সহকারীদের শিক্ষা হোক

বাসে নারী যাত্রীদের যৌন হয়রানি করা চালক ও তার সহকারীদের এক বড় অংশের মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রী ওঠানো-নামানোর সময় কৌশলে নারীদের গায়ে হাত দেওয়া শুধু নয়, রাতে নারী যাত্রীকে একলা পেলে তার সম্ভ্রমহানির ঘটনাও অহরহ ঘটছে। এমনকি দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে কখনো কখনো। গত রবিবার তুরাগ পরিবহনের চলন্ত বাসে এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। ঝুঁকি নিয়ে বাস থেকে লাফ দিয়ে তিনি কিছুটা আহত হলেও সম্ভ্রমহানি থেকে রক্ষা পান ভাগ্যগুণে। উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী তার সহপাঠীদের কাছে যৌন হয়রানির অভিযোগ করলে তারা তুরাগ পরিবহনের বেশকিছু বাস আটকান। যাত্রাবাড়ী থেকে তুরাগ পরিবহনের বাস উত্তরা পৌঁছলেই সেগুলো থামিয়ে যাত্রীদের অন্য গাড়িতে উঠিয়ে চালককে তাদের ক্যাম্পাসের কাছে বাস নিয়ে যেতে বাধ্য করেন। অভিযুক্ত চালক ও তার সহকারীদের গ্রেফতার করা না হলে আটক গাড়ির কিছু হলে তারা দায়ী থাকবেন না এমন হুঁশিয়ারিও দেন শিক্ষার্থীরা। সোমবারই গ্রেফতার করা হয় যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত তিন বাস কর্মচারীকে। বাসে নারীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুর বা রাস্তা অবরোধ না করে তুরাগ পরিবহনের বাস আটকিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেভাবে বাধ্য করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। বাসমালিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সখ্য থাকায় তাদের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন প্রযোজ্য হয় না বললেই চলে। রাজধানীর যে রুটে তুরাগ পরিবহন চলাচল করে সেই রুটের পরিবহন নৈরাজ্যে যে তারা নেতৃত্ব দিচ্ছে এটি একটি ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করব, যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িত বাস কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি রাজধানীসহ সারা দেশে চলাচলকারী বাসচালক ও তাদের সহকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারেও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। শুধু নারীদের সম্ভ্রম রক্ষা নয়, যাত্রীসহ পথচারীদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থেই বিষয়টি গুরুত্বের দাবিদার। আমরা আশা করব, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী ভূমিকা বাসস্টাফদের সমঝে চলার শিক্ষা দেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর