মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মায়ের দুধের বিকল্প নেই

দক্ষিণ এশীয় নারীরা অন্য সবার অনুকরণীয়

মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই। সারা দুনিয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা সবচেয়ে বেশি মায়ের বুকের দুধ পানের সুযোগ পায়। তবে নানা কুসংস্কারের কারণে বাংলাদেশের শিশুরা মায়ের দুধ পানের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ভুটান ও নেপালের ৯৯ শতাংশ ও আফগানিস্তানের ৯৮ শতাংশ শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য যে কোনো দেশে এ অনুপাত ৯৪ থেকে ৯৭ শতাংশ। রবিবার ইউনিসেফের নতুন এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্য যে কোনো অঞ্চলের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার নারীরা বেশি সময় ধরে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান। ফলে এ অঞ্চলের শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ার হার অনেক বেশি ও তারা দীর্ঘ সময় ধরে বুকের দুধ পায়। তবে বাংলাদেশে শিশুর জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা ও শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ানোর মতো বিষয়গুলো এখনো পর্যাপ্ত নয়। নবজাতকদের মাত্র ৫১ শতাংশকে এ দেশে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা হয়। আর ছয় মাসের কম বয়সী ৫৫ শতাংশ শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। বুকের দুধ শিশুদের জীবন বাঁচায় ও তাদের প্রাণঘাতী রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করে। শিশুদের দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। কারণ এটা শিশুর সুস্থ বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উৎস। শিশুর জীবনের দ্বিতীয় বছরে মৃত্যুর হার অর্ধেক প্রতিরোধ করতে পারে বুকের দুধ। শিশুর বুদ্ধির বিকাশেও তা খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে। মায়ের দুধ হলো যে কোনো শিশুর জন্য সেরা উপহার। দক্ষিণ এশিয়ার মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও নানা কুসংস্কার ও অপপ্রচার বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে। অনেক নারী বুকের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার ভয়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে ভয় পান। বিদেশি নামিদামি বেবি ফুড খেলে শিশুর পুষ্টি বেশি হবে এমন অপধারণাও কাউকে কাউকে প্রলুব্ধ করে। শিশুকে বুকের দুখ খাওয়ালে স্তন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। চিকিত্সাবিজ্ঞানীদের মতে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে মায়ের দুধ খাওয়ানোর মধ্যে অনেক উপকারিতা আছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার নারীরা সারা  দুনিয়ার নারীদের জন্য অনুকরণীয় বলে বিবেচিত হতে পারেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর