বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি

অস্ত্রবাজদের এখনই সামাল দিন

নির্বাচনের বছরে আইনশৃঙ্খলার দৃষ্টিগ্রাহ্য উন্নতির স্বার্থে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। সন্দেহ নেই, অবৈধ অস্ত্র জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ত্রাসী বা জঙ্গিরা অনায়াসে সংগ্রহ করতে পারছে আগ্নেয়াস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে তা দেশে প্রবেশ করছে সীমান্ত ডিঙিয়ে। তারপর চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসীদের কাছে। প্রতিনিয়ত এসব অস্ত্রের হাতবদল হচ্ছে। ভাড়ায় খাটছে অনেক অবৈধ অস্ত্র। এমনকি বৈধ অস্ত্রধারীরাও তাদের অস্ত্র ভাড়া দিচ্ছেন সন্ত্রাসীদের কাছে। অনেক সময় ভুয়া লাইসেন্স দেখিয়েও অস্ত্র কিনছে সন্ত্রাসী চক্রের সদস্যরা। জঙ্গি থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব সন্ত্রাসীর হাতে এখন অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র শোভা পাচ্ছে। পাড়া-মহল্লার উঠতি মস্তানরাই শুধু নয়, ছিঁচকে ছিনতাইকারীরাও ব্যবহার করছে আগ্নেয়াস্ত্র। ৩০ হাজার থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকায় পাওয়া যায় অবৈধ অস্ত্র। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কেনা ক্ষুদ্রাস্ত্র রাজধানীতে এনে তা বিক্রি করে সুসংবদ্ধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যরা। ভয়ঙ্কর এ কে সিরিজের অস্ত্র আসছে সমুদ্রপথে। ভারত, মিয়ানমার হয়ে দেশে আসা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। রাজধানীতে প্রায়ই ঘটছে গোলাগুলির ঘটনা। বিশেষত মাদক ব্যবসায়ীদের প্রায় সবার হাতে অস্ত্র থাকায় সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার সাহস পায় না। চাঁদাবাজি, ছিনতাই অপহরণের মতো জঘন্য অপরাধের সঙ্গেও রয়েছে অবৈধ অস্ত্রের সংশ্লিষ্টতা। ঢাকাসহ সারা দেশে দুই শতাধিক অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসায়ী রয়েছেন। সীমান্তপথে ভারত ও মিয়ানমার থেকে সহজেই বাংলাদেশে আসছে অস্ত্রের চালান। জননিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব অবৈধ চালান বন্ধে নিরন্তর চেষ্টা চালালেও অনেক ক্ষেত্রেই তারা তাদের অপকৌশলের সঙ্গে পেরে উঠছে না। অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অসৎ রাজনীতিকদের কারও কারোর সম্পর্ক থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনেক সময় অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। সাধারণ নির্বাচনের বছরে শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করতে হবে। অস্ত্র চোরাচালান শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সীমান্ত অঞ্চলে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতে নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর