বুধবার, ১৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বজগতের স্রষ্টা আল্লাহ

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বজগতের সবকিছুরই স্রষ্টা তিনি। মানুষের লক্ষ্যই হওয়া উচিত স্রষ্টায় সমর্পিত হওয়া। অন্যসব লক্ষ্যকে এই মূল লক্ষ্যের উপজাত বা মূল লক্ষ্য অর্জনের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সূরা শূরার ১১ নম্বর আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, স্রষ্টার মতো কিংবা তার সমকক্ষ কেউ নেই। সূরা হিজরে পরম করুণাময় আল্লাহ মানুষের রুহকে নিজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে ‘আনাফাখ্তু মির রুহি’ বলে অভিহিত করে মানবাত্মার শ্রেষ্ঠত্বকে তুলে ধরেছেন। আল্লাহতে  সমর্পিত হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে এই স্বীকৃতির মাধ্যমে। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। সূরা জারিয়ায় এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করা হলেও তাকে একই সঙ্গে স্বাধীনভাবে ভালোমন্দ বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সূরা দাহরের ৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি মানুষকে পথ দেখিয়েছি হয় সে কৃতজ্ঞ হবে বা অকৃতজ্ঞ হবে।’ স্বভাবতই মানুষের দায়িত্ব সঠিক পথটি বেছে নেওয়া। আল্লাহ যেহেতু মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন, বিবেক দিয়েছেন সেহেতু যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া মানুষের কর্তব্য।

আল্লাহ এমন এক সত্তা কোরআনের ভাষায় যিনি সর্বোত্তম গুণের অধিকারী। সূরা নাহলের ৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘সর্বোত্তম মর্যাদাপূর্ণ গুণরাজি শুধুই স্রষ্টার।’ আল্লাহ এমনই এক সত্তা যার বিধান অলঙ্ঘনীয়। তিনি যে বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন তা ধারাবাহিক অপরিবর্তনীয় নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। সূরা সাবার ৪৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আপনি কখনো স্রষ্টার নিয়মে পরিবর্তন পাবেন না।’ স্রষ্টার সৃষ্ট জীব হিসেবে তৃপ্ত হতে হলে আল্লাহয় সমর্পিত হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সূরা রাদের ২৪ নম্বর আয়াতেও এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘যাদের বিশ্বাস আছে এবং স্মরণে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়, তারা জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্ত হয়।’

রসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘মানুষের ভিতরে এমন একটি টুকরা আছে ওই টুকরাটি যদি পরিশুদ্ধ হয় তাহলে মানবদেহের পুরো অংশ পরিশুদ্ধ হয়। কিন্তু যদি ওই টুকরাটি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে মানবদেহের পুরো অংশ নষ্ট হয়ে যায়। সেই অংশটির নাম হলো আত্মা।’ রমজানে আত্মাকে পরিশুদ্ধ রাখার জন্য চেষ্টা চালাতে হবে।

মাহে রমজান সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহকে সদাসর্বদা মননে হাজির-নাজির রাখার সুযোগ দিয়েছে। তাকওয়ার মাধ্যমে সত্যিকারের আল্লাহপ্রেমী হয়ে যারা এ সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছেন তারা সৌভাগ্যবান। আল্লাহ তাঁর প্রতি আমাদের সমর্পিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর