বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ আল্লাহর নির্দেশ

মুফতি তারিকুল ইসলাম আল-আযহারী

সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ আল্লাহর নির্দেশ

হজরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ওই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমরা অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অন্যায়ের প্রতিরোধ করবে। নতুবা অবিলম্বে আল্লাহ তোমাদের ওপর তাঁর আজাব নাজিল করবেন। তখন তোমরা তাঁর কাছে দোয়া করলেও তিনি তোমাদের সে দোয়া কবুল করবেন না। (মিশকাত, হা/৫১৪০, তিরমিজি, হা/২১৫৯)।

একজন ব্যক্তি হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমি দীনের দাওয়াতি কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, তুমি কি এ মর্যাদায় পৌঁছেছ? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আশা তো করি। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যদি তুমি মনে কর যে, কোরআন মাজিদের তিনটি আয়াত থেকে তোমার অপমানিত হওয়ার কখনো আশঙ্কা নেই তাহলে অবশ্যই তুমি দীনের দাওয়াতের কাজ করতে পারবে। সে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেন, আয়াত তিনটি কী? ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, প্রথম আয়াতটি হচ্ছে :

তোমরা কি লোকদের উত্তম কাজের নির্দেশ দিচ্ছ আর নিজেদের কথা সম্পূর্ণ ভুলে যাচ্ছ? (বাকারা : ৪৪)।

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তুমি কি এ আয়াতের ওপর উত্তমরূপে আমল করেছ? তিনি বললেন, না। দ্বিতীয় আয়াতটি হচ্ছে :

তোমরা কেন এমন কথা বল যা নিজেরা কর না? (সূরা সাফ : ২)।

এ আয়াতের ওপর কি তুমি যথাযথ আমল করেছ? তিনি বললেন, না করিনি। তৃতীয় আয়াতটি হচ্ছে :

হজরত শুআইব (আ.) নিজ জাতির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমি যেসব মন্দ কাজ করতে তোমাদের নিষেধ করছি, সেসব কাজ আমি নিজে করব এমন উদ্দেশ্য আমার নেই। বরং এমন কাজ থেকে আমি দূরে থাকব এবং তোমরা আমার কথা ও কাজে কোনোরূপ ব্যতিক্রম দেখতে পাবে না। (সূরা হুদ, ৮৮)।

ইবনে আব্বাস (রা.) জিজ্ঞেস করেন— এ আয়াতের ওপর কি তুমি আমল করেছ? সে বলল, না। আব্বাস (রা.) জিজ্ঞেস করেন। এ আয়াতের ওপর কি আমল করেছ? সে বলল, না। আব্বাস (রা.) বলেন, যাও নিজেকে সৎ কাজের আদেশ দাও এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখ। ভালো কাজের আদেশ দান ও মন্দ কাজের নিষেধ করা মুসলিমের ওপর আল্লাহর নির্দেশ। তিনি বলেন—

‘তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকতে হবে, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে এবং ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায় থেকে নিষেধ করবে। তারাই হবে সফলকাম। (সূরা আলে-ইমরান, ১০৪)।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই এমন এক উত্তম দল, যাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। তোমরা ভালো কাজের আদেশ কর ও মন্দ কাজের নিষেধ কর এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর; আর যদি গ্রন্থ প্রাপ্তগণ বিশ্বাস স্থাপন করত, তবে অবশ্যই তাদের জন্য মঙ্গল হতো। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমরা মুমিন এবং তাদের অধিকাংশই দুষ্কার্যকারী।’ (আলে-ইমরান, ১১০)।

হলেখক : মুফাসসিরে কোরআন।

www.muftitariqulislam.com

সর্বশেষ খবর