বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে হানাহানি

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নিন

পাহাড়ি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর হানাহানি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে। গত দেড় মাসে তিন পাহাড়ি সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১০ জন। গত শুক্রবার রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে জঙ্গলী চাকমা নামের একজন নিহত হয়েছেন। একই জেলার বাঘাইছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে গত শনিবার সুরেশ বিকাশ চাকমা নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার মরাটিলার পাইয়ংপাড়ায় গত সোমবার দুর্বৃত্তের গুলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এম এন লারমা) গ্রুপের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। শুক্রবার লংগদুর দোসরপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) দুই গ্রুপের ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে গণতান্ত্রিক গ্রুপের সদস্য জঙ্গলী চাকমা ও সুমতী চাকমা গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় জঙ্গলীর। পরে আহত সুমতী চাকমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বাগাইছড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয় জনসংহতি সমিতির এম এন লারমা গ্রুপের ক্যাডার সুরেশ বিকাশ চাকমা। লারমা গ্রুপ তাদের কর্মীর হত্যাকাণ্ডের জন্য ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে দায়ী করেছে। খাগড়াছড়ির দুর্গম এলাকা পাইয়ংপাড়ায় লারমা গ্রুপের বিজয় ত্রিপুরা নামের একজন ক্যাডার নিহত হয়েছে। এ ঘটনায়ও ইউপিডিএফকে দায়ী করা হয়েছে লারমা গ্রুপের পক্ষ থেকে। গত মাসের প্রথম দিকে দুই দিনে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর হানাহানিতে ছয়জন প্রাণ হারায়। যাদের মধ্যে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এম এন লারমা) শীর্ষস্থানীয় নেতা ও নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা ও ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা। নামে রাজনৈতিক সংগঠন হলেও পাহাড়ি সংগঠনগুলোর কর্মীদের মূল পেশা চাঁদাবাজি। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পরও কাঙ্ক্ষিত শান্তি আসেনি চাঁদাবাজ গ্রুপগুলোর অপতৎপরতার কারণে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর হানাহানি সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করার পাশাপাশি সন্ত্রাস দমন ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদক্ষেপ নেবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর