রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা

এ হটকারিতার অবসান কাম্য

চীন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব পরিসরে মহা সংঘাতের দামামা বাজাচ্ছে বললে খুব একটা ভুল হবে না। ব্যবসায়ী পেশা থেকে হঠাৎ করে রাজনীতিতে আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাণিজ্য যুদ্ধ সূচনার জন্য মূলত দায়ী। বৈশ্বিক সম্পর্ককে ব্যবসায়িক লাভ-লোকসানের দৃষ্টিতে বিবেচনা করতে গিয়ে তিনি শুধু ভিন্ন মতাবলম্বী চীনই শুধু নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্যে সব দেশ একতরফাভাবে লাভবান হচ্ছে এমন বদ্ধমূল ধারণায় ট্রাম্প বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যে শুল্কের বোঝা চাপিয়েছেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছেন। আরও ৫০ হাজার কোটি ডলারের পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বলাই বাহুল্য, মার্কিন এ পদক্ষেপে চীন নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে নেই। তারাও তাদের দেশে আমদানিকৃত মার্কিন পণ্যে একই হারে শুল্ক বসিয়েছে। এর আগে ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে বাগড়া দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। ইস্পাতসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করায় একই পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র দেশগুলো। ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্প ছিলেন পুতিন বন্দনায় বিমুগ্ধ। বলা হয় ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার পেছনে নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে রাশিয়া। সে রাশিয়ার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে জোরালোভাবে। ভারতকে ট্রাম্প প্রশাসন মিত্র বলে ভাবলেও রাশিয়ার কাছ থেকে তারা হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি কেনায় ওয়াশিংটন দারুণভাবে নাখোশ। বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিকে তারা ভালো চোখে দেখিনি। প্রতিবেশী মেক্সিকোসহ অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে সব কিছুর ওপরে আর্থিক লাভ-লোকসানকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে। বাণিজ্য যুদ্ধের তোড়জোড় বিশ্ব ব্যবস্থায় ফাটল ধরিয়েছে। এ যুদ্ধের পরিণতিতেও অস্ত্র বারুদের যুদ্ধ জেঁকে বসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সে ধরনের হটকারিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে তা মানব সভ্যতার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। যা থেকে সাবধান হওয়াই হবে শ্রেয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর