বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

হজ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য ফরজ করা হয়

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

হজ উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য ফরজ করা হয়

হজ হলো সম্পদশালী বান্দার ওপর আল্লাহর হক। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের ওপর আল্লাহর এই অধিকার যে, বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি-সামর্থ্য যে রাখে, সে যেন হজ করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করে কুফরির আচরণ করবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্বপ্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন।’ সূরা আলে-ইমরান : ৯৭।

হজের আভিধানিক অর্থ সংকল্প করা বা কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় নির্দিষ্ট মাসের নির্দিষ্ট তারিখে মক্কার কাবাঘর ও তার সংলগ্ন কয়েকটি স্থানে ইসলামের বিধান অনুযায়ী অবস্থান বা জিয়ারত করাকে হজ বলা হয়। হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবাকে কেন্দ্র করে আল্লাহ-নির্দেশিত নিয়মে হজ প্রবর্তন করেন। উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর নবম হিজরিতে তা ফরজ হয়। শরিয়তের বিধান মোতাবেক নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। হজ ফরজ হওয়ার শর্ত সাতটি— ১. সুস্থ মস্তিষ্ক হওয়া ২. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া ৩. স্বাধীন হওয়া ৪. সুস্থ হওয়া ৫. যাতায়াত ও মক্কায় অবস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ থাকা ৬. রাস্তা নিরাপদ হওয়া ৭. ফিরে আসা পর্যন্ত স্ত্রীলোকদের জন্য স্বামী অথবা এমন কোনো আত্মীয় সফরসঙ্গী থাকা আবশ্যক যার সঙ্গে বিবাহ হারাম। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে কেবল হজই শারীরিক ও আর্থিক উভয় ইবাদতকে শামিল করে। মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে হজ ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হজ হলো বিশ্বাসীদের আদি পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত। আল কোরআনে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি আল্লাহর নির্দেশনা প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর লোকদের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে সব দূরবর্তী স্থান থেকে হেঁটে ও উটের ওপর সওয়ার হয়ে আসবে। যাতে তারা তাদের কল্যাণ এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোয় আল্লাহর নাম স্মরণ করে তার দেওয়া জীবিকা হিসেবে চুতষ্পদ জন্তু জবাই করার সময়। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং অভাবগ্রস্তকে আহার করাও।’ সূরা হজ : ২৭-২৮। হজ শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য ফরজ করার ঘটনা মুসলমানদের জন্য অসামান্য সম্মান। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হজ করার তাওফিক দান করুন।

            লেখক  : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর