বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষ বৈঠক

সংঘাত নয়, সমঝোতার পথ খুলুক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে মুখোমুখি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরমাণু ও সামরিক শক্তির অধিকারী দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠককে বিশ্বশান্তির জন্য সুসংবাদ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সন্দহ নেই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিচিতি রাগচটা মানুষ হিসেবে। অন্যদিকে ভ্লাদিমির পুতিনকে অতীতের জার শাসকদের উত্তরসূরি হিসেবে ভাবা হয়। দুই নেতা আধিপত্যবাদী চরিত্রের জন্য দুনিয়াজুড়ে সমালোচিত হলেও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের দূরত্ব কমানোর যে উদ্যোগ তারা নিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার। নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর দুই বিশ্বনেতার বৈঠক শুরু হয় হেলসিংকির প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বৈঠক নিয়ে নিজ দেশে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়তে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে এ বৈঠক হবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের জন্য একটি ভূরাজনৈতিক বিজয়। বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে উষ্ণ কথাবার্তা ছাড়া  দৃশ্যত বড় ধরনের কোনো সাফল্য অর্জিত হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামত করার বিষয়ে আলাপ হয়েছে। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও সিরিয়ার মতো কয়েকটি ইস্যু নিয়ে সংলাপ শুরু করার বিষয়েও তারা কথা বলেছেন। পরস্পরের নেতৃত্বগুণের প্রশংসাকারী এ দুই নেতা তাদের দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম ফের পূর্ণোদ্যমে শুরু করার এবং জব্দ করা কূটনৈতিক সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়েও একধাপ এগিয়েছেন। বৈঠকের আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ‘খুব কম প্রত্যাশা’ নিয়ে বৈঠকটিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন। দুই নেতা বৈঠকের আগে বাগাড়ম্বের যে প্রদর্শনী চালিয়েছেন তা বৈঠকের পরও যে অব্যাহত থাকবে তাতে সন্দেহ নেই। স্ব স্ব দেশে নিজেদের বাহাদুরির জানান দিতেই বাগাড়ম্বের চর্চা অব্যাহত রাখাকে তারা কর্তব্য বলে ভাববেন, এমনটিই স্বাভাবিক। তার পরও দুই শীর্ষ নেতার বোঝাপড়ার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাতের যে ঝঞ্ঝার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে তা সামাল দেওয়া গেলে সেটি হবে বিশ্ববাসীর জন্য বিরাট অর্জন। উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিমের সঙ্গে বৈঠকের পর পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক সংঘাতের বদলে শান্তির পথ খুলে দিলে তাতে সব জাতিই উপকৃত হবে।

সর্বশেষ খবর