বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাংহাইর সর্বোত্তম বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন

আতাউর রহমান

সাংহাইর সর্বোত্তম বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন

আমার পোশাজীবনের শুরুটা হয়েছিল সরকারি কলেজের অধ্যাপনা দিয়ে। সে যুগে আমলাগিরির চাকরির প্রতি প্রায় সবারই অল্প-বিস্তর মোহ ছিল। আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না। তাই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সে আমলের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সেবামূলক সুবৃহৎ বিভাগে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তারূপে যোগ দিই।

কিন্তু সেই যে বলে, কম্বলি ছুড়লেও কম্বলি কভি কভি নেহি ছুড়তা হায়। আমিও আমলাগিরি ও মধ্যিখানে বেশ কিছুদিন দৌত্যগিরি করে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটালেও শিক্ষা ও শিক্ষকতার প্রতি একটা দুর্নিবার আকর্ষণ সব সময়ই বোধ করে এসেছি। তাই সরকারি চাকরি শেষে অন্যকিছু করার চেষ্টা না করে লেখালেখি ও দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আট বছর অধ্যাপনা করেছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালে আমি বলতাম, আমি টায়ার্ড (পরিশ্রান্ত) হওয়ার আগেই সরকার আমাকে রিটায়ার্ড (পুনরায় পরিশ্রান্ত) করে ফেলেছে। কিন্তু আমি সেটা মানি না বিধায় আমার পুরনো পেশায় ফিরে এসেছি।

সে যাই হোক, শিক্ষা তথা লেখাপড়ার প্রতি অনুরাগের কারণেই আমি দেশে-বিদেশে যখন যেখানে গিয়েছি সেখানে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ তথা বিশ্ববিদ্যালয় থাকলে অবশ্যই তা দেখতে গিয়েছি। আমাকর্তৃক চীনের পয়লা কাতারের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস পরিদর্শন তাই আকস্মিক হলেও অপ্রত্যাশিত নয়।

চীনের সাংহাই পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ শহর ও বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়ার সুবাদে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি ও পোশাজীবী মানুষের একটি মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। আর চাকরিজীবী পুত্র ইফতেখারের সাংহাইয়ে পোস্টিং ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পুত্রবধূ শারমিনের সাংহাইস্থ জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডির ফেলোশিপের সুবাদে আমার সাংহাইতে পদার্পণ। তো পৌঁছেই পরদিন গেলাম পুত্রের বাসার ঢিল-ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত ইউনিভার্সিটির মূল ক্যাম্পাস দেখতে। ‘মূল ক্যাম্পাস’ কথাটি বলা হলো এ কারণে যে, ইউনিভার্সিটির একাডেমিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যৌক্তিকভাবেই মূল ক্যাম্পাসকে ভাগাড় না বানিয়ে শহরের উপকণ্ঠে একে একে আরও চারটি নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হয়েছে এবং যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ছাত্র-শিক্ষক-গবেষক কারোরই কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, চাইনিজ ভাষায় ‘জিয়াওটঙ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ইংরেজিতে ‘ট্রান্সপোর্টেশন’ বা ‘কমিউনিকেশন’, বাংলায় ‘পরিবহন’ বা ‘যোগাযোগ’। জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটিতে আদিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকে প্রাধান্য দিলেও বর্তমানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রায় সব বিষয়ই পড়ানো হচ্ছে, ফলে মোট পাঁচটি ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার। এর মধ্যে পিএইচডি গবেষণারত ফেলোসহ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। আর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ১ হাজার ৮০০। যাদের প্রায় সবাই চাইনিজ এবং অনেকেই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট-ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত। শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত সবচেয়ে বড় বিকল্প ক্যাম্পাস দেখে তো আমি আরও অবাক। বিস্তারিত লিখতে গেলে সাতকাহন হয়ে যাবে বিধায় বিরত রইলাম।

সত্যি বলতে কি, প্রথম দৃষ্টিতেই বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসটা আমাকে বিমুগ্ধ ও বিমোহিত করে ফেলল। এমন তকতকে-ঝকঝকে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, এমন বৃক্ষপল্লব-সুশোভিত ও শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশ, এমন পরিকল্পিত অনতিউচ্চ ভবনসমূহ, এমন ফুলবাগানের সমারোহ— আমি জীবনে বহু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছি, খুব কমই প্রত্যক্ষ করেছি। এ ক্ষেত্রে বিলেতের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়তি যে সৌন্দর্যটুকু আমার চোখে ধরা পড়েছিল তা হচ্ছে, ক্যাম্পসের মধ্যিখান দিয়ে প্রবাহিত ক্যানেল বা খাল, যেখানটায় সামারে ছাত্রছাত্রীরা দলগতভাবে নৌকাবাইচের মনোমুগ্ধকর প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

তবে অন্য দুটো ব্যাপারে আমার মনে হয় জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটি এগিয়ে আছে। এক. প্রতিটি ক্যাম্পাসে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা হালাল ফুডের ক্যান্টিন। দুই. ক্যাম্পাসের হোস্টেলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে মফস্বল থেকে অভিভাবকরা আসতেই পারেন। ওরা রাতযাপন করবেন কোথায়? জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ দেখলাম তাও বিবেচনায় রেখেছে এবং অভিভাবকরা যাতে সস্তায় সাময়িক থাকতে পারেন সেজন্য ক্যাম্পাসের ভিতরেই বাকায়দা বাণিজ্যিক হোটেলের ব্যবস্থা করে রেখেছে। তা অভিভাবক প্রসঙ্গ গল্পটা যখন মনে পড়েই গেল, এস্থলে বলে ফেলি—

গ্রামের অবস্থাপন্ন কৃষক এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তার ছেলেকে দেখতে। ছেলেকে তিনি খুঁজে বের করলেন কেমিস্ট্রি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে। বাপকে ইমপ্রেস করার জন্য ছেলে বলল, ‘আমরা আবিষ্কার করার চেষ্টা করছি এমন একটি তরল পদার্থ যা সব জিনিস গলাতে সক্ষম হবে।’ বাপ এক মিনিট কী যেন চিন্তা করে ছেলেকে প্রশ্ন করে বসলেন, ‘আচ্ছা, তোমরা যখন ওটা আবিষ্কার করবে, তখন রাখবে কোথায়? হা-হা-হা!’

যাকগে। জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটির সিংহ-দরজায় শোভা পাচ্ছে আক্ষরিক অর্থেই মারবেল পাথরে খোদাই করা দুটো বিরাট সিংহমূর্তি। পাশেই প্রশস্ত ফুটপাথ, যার একপাশে ছোট্ট মারবেল পাথরে লেখা আছে চাইনিজ ও ইংরেজিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তথা পরিচিতি। আমি তা আমার নোটবুকে টুকে নিয়ে এলাম : ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের উচ্চশিক্ষার সবচাইতে পুরনো গৌরবজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত সাংহাই জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটির যাত্রা হয় ১৮৯৬ সালে চাইনিজ শিল্পপতি শেন শুয়ানহুয়াই কর্তৃক কলেজরূপে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ১৯৫৯ সালে সরকারিভাবে এর নামকরণ হয় সাংহাই জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটি। ইউনিভার্সিটির বর্তমান মূল ক্যাম্পাসটি হচ্ছে তিন শতাব্দী যাবৎ গণচীনের একমাত্র আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটা বিশেষ বিখ্যাত এর সিংহ-দরজা আর ১৮৯৯ সালে নির্মিত প্রাচীনতম একাডেমিক বিল্ডিং এবং ১৯৩২ সালে নির্মিত প্রকৌশল বিল্ডিং ও ১৯৩৩ সালে নির্মিত প্রশাসনিক ভবনের জন্য। ১৯৯৪ ও ২০০৫ সালে সাংহাই মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট কর্তৃক এ ভবনগুলোকে বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ভবন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গক্রমে একটা বিষয়, যা আমাকে বহুদিন যাবৎ কুরে কুরে খাচ্ছে, এখানে ব্যক্ত না করে পারছি না। গেল শতাব্দীর ষাটের দশকে আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন সেখানে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫ হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজারে। এর পেছনে জ্ঞানের প্রসারই যে একমাত্র কারণ নয়, তা কমবেশি সবারই জানা। তা কারণ যা-ই থাক, অবস্থা কিন্তু এখন একেবারে লেজেগোবরে এবং হাত পিঠের যেটুকু পর্যন্ত যায় তার বাইরে হাত দিয়ে চুলকাতে গেলে অবস্থা এমনই হয়। ঢাবির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অক্সফোর্ড মডেলে পুরোপুরি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়রূপে। অতএব আবাসনের যথেষ্ট ব্যবস্থা না করে ক্রমাগত নতুন নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা ও ছাত্রসংখ্যা বাড়ানোয় যে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। ছাত্ররা হলের রুমের ভিতরে ডাবলিং-ট্রিপলিং তো করছেই, শীতের দিনে বারান্দায় রাত কাটাতে গিয়ে নিউমোনিয়া হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বস্তুত বহু আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল শহরের বাইরে বিকল্প ক্যাম্পাস গড়ে তোলা। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের আগের সেই ভাবমূর্তি ও সম্মান আর নেই। আমি টেবিল-টকে অনেক সময় একটা ঘটনার কথা বলি : ঢাবিতে পড়াকালে আমি থাকতাম এস এম হলে। তো ১৯৬৪ সালে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায়ও একসময় তা শুরু হয়ে গেল। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তখন অনেকেই ঢাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন। আমার এক ১২-১৩ বছরের ভাগনে সে সময় ঢাকায় বোবা স্কুলে পড়ত। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওকে নিয়ে আমি চলেছি তৎকালীন ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে (কমলাপুর তখনো চালু হয়নি) রাতের ট্রেনে তুলে দিতে। স্টেশনের কাছে পৌঁছতেই এক বিহারি দাঙ্গাকারী আমাদের হিন্দু পলায়নকারী ভেবে উন্মুক্ত চাকু হাতে ছুটে এসেছে, এমন সময় আমি সাহস করে সজোরে ‘অ্যাই, আমি মুসলিম হলের ছাত্র আর এ হচ্ছে আমার ভাগনে’ বলতেই যুবকটি হাত গুটিয়ে নিয়ে বিহারি ঢঙে বলে উঠল, ‘আগে বইলবেন তো, দিছিলাম তো অহন শেষ কইরা।’

ঘটনাটির কথা স্মরণ হলে আজও আমার গা শিউরে ওঠে। লোকটি যদি আমার কথা অবিশ্বাস করত আর সঙ্গের ওই সত্যিকারের বোবা ছেলেটির সঙ্গে কথা বলতে চাইত, তাহলে কী ঘটত? এবং পারবে কি এখনকার এস এম হলের কোনো ছাত্র এভাবে বলতে ও সমীহ আদায় করতে? আর এখন বললেও হয়তো সে বলবে, আমি অমুক দলের কিংবা অমুক লীগের ক্যাডার। কিন্তু তাতে কাজ হবে কি? আমি পাঠকদের শালিস মানলাম।

ফিরে আসি জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটির ব্যাপারটায়। ক্যাম্পাসের ভিতরে হাঁটতে হাঁটতে একসময় গিয়ে উপস্থিত হলাম এক কোণে অবস্থিত একটি সুরম্য চার তলা ভবনের সামনে। এটি চিয়ান শুয়ে চেন মেমোরিয়াল লাইব্রেরি ও মিউজিয়াম। এটির প্রবেশমূল্য ফ্রি এবং প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা দলে দলে এটি পরিদর্শন করেন।

চিয়ান শুয়ে চেন (১৯১১-২০০৯) চীনের একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও মহাকাশ প্রোগ্রামের পথপ্রদর্শক। তিনি ১৯৩৪ সালে জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্র্যাজুয়েশনের পর আমেরিকায় গিয়ে পিএইচডি করেন এবং সেখানে ২০ বছর অবস্থানের পর মাতৃভূমির টানে বিলাসী জীবন ত্যাগ করে ১৯৫৫ সালে দেশে ফিরে আসেন। তখন তার মাতৃভূমি ছিল অর্থনৈতিক ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের দিক থেকে অনেক অনুন্নত। তার মূল্যবান প্রযুক্তিগত সহায়তায় গণচীন অচিরেই মহাকাশবিজ্ঞানে এগিয়ে যায় এবং সেই ১৯৬০ সালেই প্রথম মিসাইল উেক্ষপণ করে। অতঃপর চীনের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। শুধু কি তাই! বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী চিয়ান শুয়ে চেন বহুকাল জিয়াওটঙ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনাও করেছেন এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও অধ্যাপনার ফাঁকে ফাঁকে বই পড়া, চিঠিপত্র লেখা, পেইন্টিং, মিউজিক ও ফটোগ্রাফির সঙ্গে সঙ্গে কবিতাও রচনা করেছেন। তার কৃতজ্ঞ জাতি তাই জীবদ্দশায় তাকে বহুবিধ পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করেছে এবং মৃত্যুর পর তার বিচরণভূমিতেই লাইব্রেরি-কাম-মিউজিয়ামটি প্রতিষ্ঠিত করেছে।

এসব তথ্যই আমি পেয়েছি মিউজিয়ামের চার তলাব্যাপী বিস্তৃত অডিও-ভিডিও ক্যাপশনযুক্ত স্থিরচিত্র থেকে। পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী হওয়া সত্ত্বেও তিনি যে ছিলেন একজন নিরহংকারী তথা বিনয়ী ও উত্কৃষ্ট মানুষ, মিউজিয়ামের দেয়ালে উত্কীর্ণ তার কিছু বাণীই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। এস্থলে গোটা তিনেক বাণী আমি ইংরেজি থেকে বাংলায় রূপান্তরিত করে উপস্থাপন করছি, বিদগ্ধ পাঠক কিছু চিন্তার খোরাক পেয়েও যেতে পারেন—

(১) ‘আমি একজন চাইনিজ। আমি কখনো আমেরিকায় আমার সারা জীবন কাটানোর পরিকল্পনা করিনি। ১৯৫০ সালে যখন জানলাম নতুন চায়না প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমি ভাবলাম যে আমার স্বদেশে ফেরার সময় হয়েছে।’

(২) ‘চীনের লোকেরা যদি মনে করে যে চিয়ান শুয়ে চেন দেশ ও জাতিকে কিছু দিয়েছেন তবে ওটাই হবে আমার সর্বোত্তম পুরস্কার। কোনো বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সম্মাননাকে আমি গ্রাহ্য করি না।’

(৩) ‘(কমিউনিস্ট) পার্টি ও জাতি আমাকে অনেক সম্মান দিয়েছে। তবে একজনের ওপর স্তূপীকৃত না করে সম্মান অন্যদেরও দেওয়া উচিত, যাতে মানুষ উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত হয়।’

পাদটীকা : যে দেশ বা সমাজে প্রকৃত গুণীর কদর হয় না, সে দেশ বা সমাজে সচরাচর গুণীর আবির্ভাব হয় না— এটা বোধকরি    সবারই জানা।

লেখক : রম্য সাহিত্যিক। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক।

সর্বশেষ খবর