শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পবিত্র হজে নারীদের করণীয় ও বর্জনীয়

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

পবিত্র হজে নারীদের করণীয় ও বর্জনীয়

নারীরা সামর্থ্যবান হলে তাদের ওপরও হজ ফরজ। তবে হজ আদায়ের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষভাবে পালনীয় কিছু বিধান রয়েছে; যা তাদের হজ পালনে সুবিধা ও পবিত্রতা রক্ষায় অধিক সহায়ক। হজে গমনেচ্ছুক মা-বোনদের হজের কার্যাবলি সঠিকভাবে সম্পাদনের সুবিধার্থে এ-সংক্রান্ত কিছু বিধিবিধান পাঠকের খেদমতে উপস্থাপন করছি :

প্রত্যেক নারীকে অবশ্যই মাহরাম পুরুষের সঙ্গে হজে যেতে হবে। মাহরাম বলা হয় এমন পুরুষকে যার সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ। যেমন পিতা, পুত্র, স্বামী, আপন ভাই, আপন চাচা, আপন মামা ইত্যাদি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কোনো নারী যেন স্বীয় মাহরাম ছাড়া সফর না করে।’ অতঃপর এক সাহাবি আরজ করলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল! আমি জিহাদে যাওয়ার জন্য সেনাদলে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আর আমার স্ত্রী হজে যেতে ইচ্ছা করেছেন।’ এ কথা শুনে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমিও তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজে যাও।’ বুখারি।

ঋতুবতী অবস্থায় তাওয়াফ করা যাবে না; তবে হজের অন্যান্য আহকাম পালন করা যাবে। আর ঋতু শেষ হলে গোসল করে তাওয়াফ করে নিতে হবে। উল্লেখ্য, এ কারণে তাওয়াফ বিলম্বিত হলে গুনাহ হবে না। একদা হজরত আয়েশা (রা.) হজের সময় ঋতুবতী হলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হাজিরা যা করে তুমিও তা কর, তবে পবিত্র না হয়ে তাওয়াফ করবে না।’ বুখারি।

ইহরাম অবস্থায় সাধারণ ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে এবং মাথা ঢেকে রাখতে হবে। আকর্ষণীয় পোশাক পরিধান করা বা চেহারা ঢেকে রাখা যাবে না। এখানে চেহারা না ঢাকার দ্বারা উদ্দেশ্য এই নয় যে, চেহারা সম্পূর্ণ খুলে রাখতে পারবে, বরং ইহরাম অবস্থায়ও পর্দার প্রতি সর্বোচ্চ খেয়াল রাখা জরুরি। তাই মাথার ওপর ক্যাপ বা এ-জাতীয় কিছু পরিধান করে তার ওপর নেকাব ঝুলিয়ে দেবে; যাতে নেকাবের কাপড় চেহারা স্পর্শ না করে।

নারীরা পুরুষের মতো মাথা মুণ্ডাবে না। বরং চুলের আগা থেকে এক কর পরিমাণ ছেঁটে ফেলবে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নারীদের ব্যাপারে মাথা মুণ্ডানোর বিধান নেই, তাদের জন্য রয়েছে ছোট করার বিধান।’ আবু দাউদ। হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের মাথা মুণ্ডন করতে নিষেধ করেছেন।’ তিরমিজি।

রমল ও ইজতেবা করা যাবে না। এ বিষয়ে ইবনে মুনজির (রহ.) বলেন, ‘তাওয়াফ কিংবা সায়ি কোনো ক্ষেত্রেই নারীরা রমল ইজতেবা করবে না। কারণ এর উদ্দেশ্য হলো শক্তিমত্তা ও বীরত্ব প্রকাশ করা, যা নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অধিকন্তু পর্দা রক্ষা করাই তাদের মূল বিষয়। আর এ ক্ষেত্রে পর্দা লঙ্ঘিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।’ সূত্র : ফাতাওয়ায়ে শামি, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া, কিতাবুল হজ ইত্যাদি।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা  ঢাকা।

Email : [email protected]

সর্বশেষ খবর