শিরোনাম
বুধবার, ৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত পরিবহন আইন

সব নিয়ম দূর করাও জরুরি

মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে এ সম্পর্কিত আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাজনিত প্রাণহানির ঘটনায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত খসড়া আইনে বলা হয়েছে, এ আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন মোটরযান চালনাজনিত কোনো দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে কোনো ব্যক্তি আহত বা প্রাণহানি ঘটলে এ-সংক্রান্ত অপরাধ পেনাল কোডের (দণ্ডবিধি) ৩০২, ৩০৪ ধারা অনুযায়ী অপরাধ বলে গণ্য হবে। তবে দণ্ডবিধির কোন ধারায় মামলা হবে তা তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নির্ধারণ হবে। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সংঘটিত দুর্ঘটনায় তদন্তে যদি বোঝা যায় চালক স্বেচ্ছায় অপরাধ সংঘটিত করেছেন, কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে পিষে দিয়েছেন সে ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ শাস্তিসংবলিত ধারার প্রয়োগ হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রত্যেক চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট করে বরাদ্দ থাকবে। অপরাধ করলে পয়েন্ট কাটা যাবে, পয়েন্ট শূন্য হয়ে গেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তি অপ্রকৃতিস্থ, অসুস্থ, শারীরিক বা মানসিকভাবে অক্ষম, মদ্যপ বা অপরাধী হলে সরকার তার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে। বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর শাস্তি সর্বোচ্চ চার মাসের জেল বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। প্রস্তাবিত নতুন আইনে এই অপরাধে ছয় মাসের জেল ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চালানোর শাস্তি ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এই অপরাধের সাজা ছিল তিন মাসের জেল বা ২ হাজার টাকা জরিমানা। পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর সকল শ্রেণির সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতেই নতুন আইনে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনটি সংসদে পাস হলে তা সড়ক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। তবে আইনের যথাযথ প্রয়োগও জরুরি। আইনটি যাতে হয়রানির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয় সেদিকে সরকারকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম পরাতে বিআরটিএর দুর্নীতি ও নিয়মের অবসানও জরুরি। বলা যায়, লাইসেন্স ও ফিটনেসের ক্ষেত্রে যে অরাজকতা চলছে তার জন্য তাদের দায়ই সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম দূর না হলে নৈরাজ্য ঠেকানো কঠিন হয়ে যে দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর