রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

ভারতে সোনা পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। দুই দিনে বেনাপোল সীমান্ত থেকে পাচারের সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ কেজি সোনা। মাত্র এক দিন আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় ১২ কেজি সোনাসহ এক ভারতীয় নাগরিককে। শাহজালালসহ বাংলাদেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি মাসেই  বিপুল পরিমাণ সোনা ধরা পড়ে। মনে করা হয় এ সোনার সিংহভাগই ভারতে পাচারের জন্য আনা হয়। বিমানপথে বিদেশ থেকে যে সোনা চোরাচালান হয়ে আসে তার বড়জোর এক দুই শতাংশ ধরা পড়ে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে চলছে এ কর্মকাণ্ড। মাঝে মাঝে কিছু কিছু চালান ধরা পড়লেও বেশির ভাগ চালান নিরাপদে পার হয়ে চলে যাচ্ছে সীমান্তের ওপারে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সোনা বহনকারীদের দু-এক জন ধরা পড়লেও আড়ালে থেকে যাচ্ছেন গডফাদাররা। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ভারত সোনা আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার পর চোরাপথে সোনা আমদানি বেড়ে যায় হুহু করে। সোনা চোরাকারবারিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ৪ হাজার কিলোমিটারের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। সোনা পাচারের সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ট্রানজিট রুট হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। আকাশপথে আসা সোনা বাস ও ট্রেনে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা, বেনাপোল, কুষ্টিয়া, যশোর, লালমনিরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী দিয়ে পাচার হচ্ছে। ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার কেজি সোনার চাহিদা রয়েছে। দৈনিক চাহিদা ৩ হাজার ৮৯৭ কেজি। অনুমিত হিসাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ কেজি সোনা পাচার হয়। সুসংবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সোনা চোরাচালান হয়ে আসছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। অবৈধভাবে সোনা আমদানির পথ বন্ধ করতে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে আমদানির শুল্ক ২০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা পাচার রোধে কোনো অবদানই রাখতে পারেনি। কারণ পাচারের ক্ষেত্রগুলোয় যারা দায়িত্বরত তাদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের লেনদেনের সম্পর্ক থাকায় অবাধে বিদেশ থেকে সোনা আসছে। কখনো দুই পক্ষের মধ্যে লেনদেনে অসুবিধা হলে কিংবা আইওয়াশের জন্য ধরা পড়ে সোনার চালান। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই বিমানবন্দরে চোরাচালানের যে মৃগয়া ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে তা বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। চোরাচালান রোধে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর