সোমবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওষুধশিল্পের সাফল্য

কাঁচামাল উৎপাদনেও উদ্যোগ নিতে হবে

ওষুধশিল্পকে দুনিয়াজুড়ে দেখা হয় সমীহের চোখে। সে শিল্পে বাংলাদেশ এখন এক সম্ভাবনার নাম। স্বাধীনতার পর দেশ যেসব শিল্পে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে ওষুধ শিল্পের স্থান প্রথম সারিতে। স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশ ছিল মূলত ওষুধ আমদানিকারক দেশ। গুটিকয়েক ওষুধ তৈরি হতো এদেশে। কালের বিবর্তনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ওষুধ তৈরিতে সবচেয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। নিজেদের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার পরও ১৫০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ওষুধ শিল্পে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হলেও প্রতিবন্ধকতাও কম নয়। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের ৩০ শতাংশ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে, বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানিনির্ভর। দেশে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দেশ থেকে বছরে প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওষুধ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। গত অর্থবছরে ১০ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে। দেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৮৬৮ কোটি টাকা। আমেরিকা-ইউরোপের মতো দেশেও বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। ক্যান্সারসহ নানান জটিল রোগের ওষুধ এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। ১৯৯২ সালে ইরান, হংকং, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পেনিসিলিন তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি করে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তী বছরে তারা ১৮ আইটেমের ওষুধ রাশিয়ার বাজারে রপ্তানি করে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ডব্লিউটিও থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্তু মেধাস্বত্ব (পেটেন্ট) আইন মানার বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় পেয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নেতৃস্থানীয় ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্থানের যে সুযোগ রয়েছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। ওষুধ শিল্পের উন্নয়নে সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাঁচামাল উৎপাদনে নিতে হবে উদ্যোগ। যা সম্ভব হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষ বা সাধারণ কৃষকের পক্ষে ঔষধি গাছপালা উৎপাদন করে আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখা সম্ভব হবে। ওষুধ শিল্পের সামনে যে সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে তা কাজে লাগাতে ওষুধের মানের ব্যাপারে হতে হবে আপসহীন। এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসনের কড়া নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর