সোমবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞার খড়গ

খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে সাবধানতা কাম্য

পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় বিদেশে কৃষি ও খাদ্যজাত পণ্যের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ)  দেশগুলোতে রপ্তানি হতো বাংলাদেশের পান। কিন্তু ২০১৪ সালে রপ্তানিকৃত পানে স্যালমোনেলা নামের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি উদঘাটিত হলে পান আমদানি বন্ধ করে দেয় ইসিভুক্ত দেশগুলো। পানে স্যালমোনেলা নামের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি যাতে না থাকে সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ইইউ’র পক্ষ থেকে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কয়েকবার চিঠিও দেওয়া হয়। বলা হয়, তাদের পরামর্শ মেনে পান রপ্তানি করা না হলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কানে পানি না যাওয়ায় ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে। বাংলাদেশ থেকে হালাল মাংস রপ্তানির সম্ভাবনাময় বাজার ছিল সৌদি আরব। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি কোম্পানি হালাল মাংস রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করছিল। কিন্তু যথাযথ মান নিশ্চিত না করায় এখন মাংস রপ্তানিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশের মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরবে রপ্তানিকৃত প্রায় ১২ হাজার কেজি খাদ্যপণ্যে ভৌত রাসায়নিক ও জীবাণুঘটিত ত্রুটি উদঘাটিত হওয়ায় এ সমস্যার সমাধানে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অথরিটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে মাছ ও সবজি রপ্তানিতেও সমস্যা রয়েছে। ভুয়া সনদ দিয়ে সবজি রপ্তানি করায় বেশ কয়েকবার সতর্কতা ও সাময়িক নিষেধাজ্ঞাও আসে ইইউ থেকে। এ ধরনের অভিযোগের মুখে গত বছরের মার্চে মরিচ, বড়ই, করলা ও চিচিঙ্গা ইউরোপে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কৃষি মন্ত্রণালয়। ব্রাসেলসের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে গন্ধযুক্ত চিংড়ি রপ্তানি করায় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানাও দিতে হয়েছে বাংলাদেশের একটি কোম্পানিকে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত গুঁড়া মশলার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন দেশে। কৃষি ও খাদ্যজাত পণ্য রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানিকারকদের অতিলোভী মনোভাবের কারণে সে সম্ভাবনা হোঁচট খাচ্ছে। এ বিপদ ঠেকাতে রপ্তানিকৃত খাদ্যপণ্যের মান নিশ্চিত করতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। রপ্তানির আগে যথাযথভাবে পরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর