শুক্রবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সরকারি নির্মাণ কাজ

মান নিশ্চিত করারও উদ্যোগ নিন

রাস্তা নির্মাণের কিছুদিন যেতে না যেতেই বেহাল হয়ে পড়া অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই অবস্থা দাঁড়িয়েছে সরকারি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও। নির্মাণের দুই-এক বছর পরই সরকারি ভবনের পলেস্তারা ঝরে  পড়তে শুরু করে। এ অবাঞ্ছিত অবস্থা থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় সারা দেশের রাস্তা ও সরকারি ভবন রক্ষণাবেক্ষণে কয়েকটি নির্দেশনা পাঠিয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে দেশে যেসব রাস্তা ও ভবন তৈরি হবে নির্মাণ কর্তৃপক্ষ তার লাইফটাইম নির্ধারণ করবে। ভবন, রাস্তা ও অন্যান্য স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরওয়ারি কী পরিমাণ বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তা নির্ধারণ করবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে লাইফটাইম নির্ধারণসংবলিত সব কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিষয়টি মনিটরিং করবে এমনটিও বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়। স্মর্তব্য, বিপুল সরকারি অর্থ ব্যয় করে স্থাপনা ও সড়ক নির্মাণের পর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় নির্মিত রাস্তা ও সরকারি ভবন রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। সরকারি নির্মাণকাজের গুণ ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি এসব কাজে যাতে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয় সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন রাস্তার সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কারের জন্য ‘সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড আইন’ থাকলেও সরকারি স্থাপনা সুরক্ষার জন্য কোনো তহবিল বোর্ড নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কার্যকর হলে সড়ক ও সরকারি স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণের বেহাল অবস্থার অবসান হবে। তবে সব কিছুর আগে সড়ক ও সরকারি স্থাপনা নির্মাণে যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়, সে অনুযায়ী নির্মাণ কাজ যাতে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সড়ক ও সরকারি স্থাপনা নির্মাণের তত্ত্বাবধানে নানা কর্তৃপক্ষ থাকলেও তা কাজের মান নিশ্চিত করার বদলে শুভঙ্করের ফাঁকি বাড়াতেই অবদান রাখছে। প্রতিটি সরকারি নির্মাণ কাজ মানসম্মতভাবে সম্পন্ন হলে তা চালুর দু-তিন বছরের মধ্যে বেহাল অবস্থায় পড়ার কথা নয়। এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। সড়ক ও স্থাপনা লাইফ টাইমের আগে বেহাল হয়ে উঠলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর