মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট বক্তব্য

ইভিএম বিতর্কের অবসান হোক

নির্বাচন কমিশন এক তৃতীয়াংশ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তাতে পানি ঢেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ইভিএমের সাহায্যে সরকারি দল কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে জিতে আসার ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগও করে। ক্ষমতাসীন মহাজোটেও ইভিএম ব্যবহার নিয়ে ভিন্নমত দেখা দেয়। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না বলে তারা মতও দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইভিএমের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভোট গ্রহণের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেশে ইভিএম আসার পর তিনি সব সময় এ পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের পক্ষে ছিলেন এবং এখনো আছেন। তবে এটি তাড়াহুড়া করে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। এটি প্রাকটিসের ব্যাপার। এ পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা যেতে পারে। তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কিছু কিছু জায়গায় ইভিএম ইলেকশন হয়েছে। এ পদ্ধতির সুবিধা হলো মানুষ টিপ দিয়ে ভোট দিতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনের ফলাফল জানতে পারে। সরকার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের পক্ষে থাকলেও সেটি চাপিয়ে দেওয়া হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী যে সুস্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন তা এ সংক্রান্ত বিতর্কের অবসান ঘটাবে বলে আশা করা যায়। এর ফলে আগামী নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে কোনো কোনো ভোটকেন্দ্র বা বুথে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হলেও সার্বিকভাবে কোনো আসনে পূর্ণাঙ্গভাবে এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে না। নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম আমদানির যে প্রস্তুতি নিচ্ছিল, আশা করা যায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তা থেমে যাবে। ইভিএম নিয়ে যে অনাকাক্সিক্ষত বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তারও ইতি ঘটবে। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এক তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম ব্যবহারের যে অভিলাষ ব্যক্ত করেছিল তাতে আর যাই হোক সুচিন্তা ও সুবিবেচনা ঠাঁই পায়নি। নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা ঘোড়ার আগে গাড়িজুড়ে দেওয়ার যে অবিমৃশ্যকারিতা দেখিয়েছেন তা কাম্য ছিল না।

সর্বশেষ খবর