মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গাড়ি নয় জীবন্ত বোমা

মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি সিলিন্ডার নিষিদ্ধ করুন

গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানি একটি নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। গত তিন বছরে সিএনজি চালিত ১৭৫টি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৪০০ মানুষ। একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও দুর্ঘটনার রাশ টানার কোনো উদ্যোগ না থাকা উদ্বেগজনক। জ্বালানি বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৮০ সিএনজি কনভার্সন ওয়ার্কশপ রয়েছে। দেশে দুই লাখ ৫৪ হাজার ৫২২ গাড়ি জ্বালানি তেল থেকে সিএনজিতে রূপান্তর করা হয়েছে। এসব গাড়িতে সিলিন্ডার রয়েছে চার লাখ। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত এক তথ্য অনুযায়ী সিএনজি কনভার্সন সেন্টারসমূহে বড়জোর ৬৫ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হয়েছে। আগের দুই বছর যোগ করলে পাঁচ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ ৯৪ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হলেও বাকি তিন লক্ষাধিক সিলিন্ডার আজ পর্যন্ত একবারের জন্যও রিটেস্ট করা হয়নি। সড়ক-মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় প্রায়ই গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হচ্ছে, দুর্ঘটনায় যানবাহন ভস্মীভূতসহ প্রাণহানিও ঘটছে অহরহ। বৈধভাবে সংযোজিত তিন লক্ষাধিক সিলিন্ডার ইতিমধ্যে রিটেস্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নকল-ভেজাল নিম্নমানের অসংখ্য সিলিন্ডার। রিটেস্টবিহীন সিলিন্ডারগুলো চরম ঝুঁকি সত্ত্বেও বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারে ব্যবহƒত হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ, ত্র“টিযুক্ত সিলিন্ডারগুলো একেকটি জীবন্ত বোমা হিসেবে বিরাজ করছে। দেশে এ পর্যন্ত সিএনজি চালিত যেসব সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে তার প্রতিটিই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এসব সিলিন্ডারে কোনো সেফটি সিস্টেম ছিল না। ইদানীং পুরনো জাহাজের মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারকেও গাড়িতে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ভয়ঙ্কর ঝুঁকি হয়ে ওঠা এসব সিএনজি সিলিন্ডার যানবাহনের যাত্রীই শুধু নয় পথচারীদের কিংবা অন্যান্য যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের জন্যও হুমকি হয়ে চলাচল করছে। জনস্বার্থে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা দরকার। সড়ক-মহাসড়কে চলাচলকারী মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারবাহী গাড়ি আটকের বিষয়টিও ভাবা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর