বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা

পরিকল্পিত উন্নয়নের পথ দেখাবে

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ শতবর্ষ মেয়াদি ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বা ডেল্টা পস্ন্ল্যান অনুমোদন করেছে। দেশের অর্থনীতিকে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা অবদান রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে আশা করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, দেশ পরিকল্পিত অর্থনীতির সুফল পাচ্ছে এবং এর ফলে বেড়েছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও মাথাপিছু আয়। মূল্যস্ফীতিও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে। সামাজিক খাতেও ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। কিন্তু এসব অর্জন টেকসই হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে। এর পেছনে অন্যতম মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনের সেই প্রভাব মোকাবিলা করে দেশকে কীভাবে উন্নয়নের সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত পরিকল্পনা ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা’ বা ‘ডেল্টা পস্ন্ল্যান’। উচ্চমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন এবং পানি, জলবায়ু, পরিবেশ ও ভূমির টেকসই ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলাসহ ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাংলাদেশের স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার বিকল্প নেই। ২১০০ সালে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই আমরা সে চিত্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে ব-দ্বীপ পরিকল্পনায়। নয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে এ মহাপরিকল্পনা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল হিসেবে ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী ভাঙনে বছরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার পরিবার সর্বস্ব হারাচ্ছে। বন্যায় ফসলহানি ঘটছে। কৃষিতে ব্যাপক সারের ব্যবহার মাটির উর্বরা শক্তি নষ্ট ও পরিবেশ ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করছে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় এসব সমস্যার সমাধানে বিশেষত উৎপাদন না কমিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে কমিয়ে আনা যায় তার দিকনির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে, যা একটি আশা জাগানিয়া ঘটনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর