বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

খাদ্য উৎপাদনে সাফল্য

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও সজাগ হতে হবে

দুর্ভিক্ষ, মঙ্গা আর ক্ষুধার দেশ বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও সে সোপানে পা রাখার পর্যায়ে রয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে নীরব বিপ্লস্নব বাংলাদেশকে এ ঈর্ষণীয় পর্যায়ে উন্নীত করেছে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার (ফাও) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ এখন চাল ও মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, সবজিতে তৃতীয় এবং আলু উৎপাদনে সপ্তম স্থানে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ধান, গম, আলুসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য উৎপাদনে বইছে প্রবৃদ্ধির জোয়ার। বর্তমানে খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪ কোটি মেট্রিক টনেরও বেশি। বছরে আলু উৎপাদন হচ্ছে ১ কোটি ২ লাখ মেট্রিক টন। প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। শুধু উৎপাদনেই নয়, আলু এখন দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসলও। গত বছর আলু রপ্তানি হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের। মত্স্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, মাছ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। মাছ রপ্তানি শৈনেঃশৈনে বাড়ছে। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ফাও পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বে যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে, তার মধ্যে প্রথম দেশটি হচ্ছে বাংলাদেশ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত পাঁচ বছরে চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ৪৮ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন। শাক-সবজির উৎপাদন বেড়েছে ৩২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। তেল, ডাল ও মসলা জাতীয় ফসলের উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ১ লাখ ৫০ হাজার, ২ লাখ ৪ হাজার ও ১ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের ধানের উৎপাদন ৩ গুণের বেশি, গম ২ গুণ, সবজি ৫ গুণ ও ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। খাদ্য উৎপাদনে সরকারের মনোযোগ, কৃষি গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, উচ্চফলনশীল জাতের বীজ উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্বারোপ, সহজ কিস্তিতে ঋণব্যবস্থার কারণে কৃষিতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এসেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ। ১৭ কোটি মানুষের চাহিদা পূরণে খাদ্য উৎপাদন যেমন আরও বাড়ানো দরকার তেমন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির সাফল্যকে ধরে রাখতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখাও খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সরকারকে যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর