সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নদী ভাঙনের অভিশাপ

বিপন্নদের রক্ষার উদ্যোগ নিন

নদী ভাঙন বাংলাদেশের জন্য এক বড় সমস্যা এবং প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সর্বনাশা ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য ফল হিসেবে বাংলাদেশে নদী ভাঙনের ঘটনা বেড়েছে। পদ্মা যমুনা মেঘনা ও তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলায় পদ্মার ভাঙন সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। একনেকে এ এলাকার নদী ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও সময় মতো বাঁধ তৈরির কাজ শুরু না হওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর-শাহজাদপুর, কাজিপুর ও চৌহালী উপজেলার যমুনা তীরবর্তী মানুষের। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ ও আড়কান্দিসহ প্রায় ছয়টি গ্রামের সহস্রাধিক বসতভিটাসহ কয়েক শতাধিক হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চৌহালীর  স্থলচর-খাসপুকুরিয়া-বাঘুটিয়া ইউনিয়নে স্বল্প আকারে ভাঙন শুরু হলেও আতঙ্ক কাটছে না তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জামিরতা, ভাটপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কাজিপুরের কয়েকটি ইউনিয়ন ভাঙনের কবলে রয়েছে। পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে ফরিদপুরের সদরপুর ও চরভদ্রাসনের অবস্থা ক্রমেই ভয়াল আকার ধারণ করছে। গত এক মাসে পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের একাংশ বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। এখনো ভাঙন অব্যাহত থাকায় নদীপাড়ের হাজারো মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে যে নদীতে পানি ছিল না সেই তিস্তা উজান থেকে আসা পানিতে প্রমত্ত রূপ ধারণ করেছে। নদী ভাঙনে উজাড় হয়ে যাচ্ছে শত শত একর জমি ও ঘরবাড়ি। বাংলাদেশে বছরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারায়। এ সর্বনাশের হাত থেকে নদীতীরের মানুষকে রক্ষায় দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। নদী শাসনের যথাযথ উদ্যোগ নেওয়াও জরম্নরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর