শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংসদে শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকা

অর্থ আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

জাতীয় সংসদে বুধবার অর্থমন্ত্রী শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা উপস্থাপন করে জানিয়েছেন, বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণখেলাপির সংখ্যা দুই লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮ জন। আর শীর্ষ ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর তালিকায় শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির মধ্যে দুই সংসদ সদস্যের প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। যাদের একজন মিরপুরের আসলামুল হক ও অন্যজন রাজশাহীর এনামুল হক। তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম যথাক্রমে ঢাকা নর্থ পাওয়ার ইউটিলিটি এবং নর্দার্ন পাওয়ার সল্যুশন। খেলাপি ঋণের অভয়ারণ্য হিসেবে রয়েছে সোনালী ব্যাংকের নাম। যাদের অনাদায়ী খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা। স্মর্তব্য, অর্থমন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে সংসদে দেশের শীর্ষ ঋণখেলাপি ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেন। যাদের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। সংসদে ঋণখেলাপিদের নাম প্রকাশের পরও ঋণ পরিশোধে তাদের মধ্যে কোনো গরজ দেখা যায়নি। ঋণখেলাপিদের মধ্যে দুজন সংসদ সদস্যের প্রতিষ্ঠানের নাম স্থান পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। ঋণখেলাপি প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে ব্যাংক পরিচালক এবং কর্মকর্তাদের যোগসাজশ আছে বলে মনে করা হয়। ব্যাংক থেকে একজন কৃষক কিংবা সাধারণ ব্যবসায়ীকে ২০-৫০ হাজার টাকা ঋণ নিতে হলেও জামানত রাখতে হয়। অথচ শত শত কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কাছে জামানত হিসেবে যেসব সম্পত্তি রাখা হয়েছে তার দলিলপত্রের বেশির ভাগই ভুয়া। ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তির পেছনে মোটা অঙ্কের উেকাচ নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ঋণখেলাপিরা ঋণ লোপাটের ক্ষেত্র হিসেবে সিংহ ভাগ ক্ষেত্রে বেছে নিয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে। লুটেপুটে খাই তত্ত্বকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পার্সেন্টেজ দিয়ে তারা ঋণ নিয়েছেন এবং তা লোপাটের চেষ্টা করছেন। ২০-২৫ হাজার টাকার ব্যাংক ঋণ শোধ না করায় কৃষকের কোমরে দড়ি বেঁধে গ্রেফতার করার ঘটনা ঘটলেও শত শত কোটি টাকার ঋণখেলাপিদের ব্যাপারে ব্যাংকগুলো খুবই উদার। ব্যাংকগুলো যে ঋণ দেয় তার উৎস আমানতকারীদের টাকা। আমরা আশা করব, ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ শুধু নয়, তা আদায়েও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর