শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি গড়ে তুলুন

বাংলাদেশ সংলগ্ন আসামের সপ্তগ্রামে সংঘটিত ভূমিকম্পে বুধবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে কেঁপে উঠেছিল দেশের এক বড় অংশ। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হলেও রংপুরে তা ছিল অনেক স্পষ্ট। রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৩ অর্থাৎ মাঝারি মানের এ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলটি রাজধানী ঢাকা থেকে ২৯৩ কিলোমিটার ও রংপুর থেকে ১১৮ কিলোমিটার দূরে হলেও জনমনে আতঙ্কের কোনো ঘাটতিই হয়নি। বুধবার বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে জাপান ও চিলিসহ কোনো কোনো দেশে তা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। তারপরও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কারণ দেশের বেশির ভাগ বাড়িঘর ভূমিকম্প সহনীয় নয়। ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যার পূর্বাভাস দেওয়ার সক্ষমতা মানুষ অর্জন করতে পারেনি। ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রকৃষ্ট উপায় হলো সব ধরনের স্থাপনা এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার উপযোগী করে গড়ে তোলা। আমাদের দেশে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হয় না, এমন অভিযোগই প্রবল। ফলে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও বাংলাদেশে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বড় ধরনের ভূমিকম্প ডেকে আনতে পারে মানবিক বিপর্যয়। জনমনে ভূমিকম্পজনিত আতঙ্ক বিরাজ করার পেছনে যেনতেনভাবে ভবন নির্মাণের বিষয়টি জড়িত। দুই বছর আগে একটি সরকারি ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশের চটা ব্যবহারের ঘটনা ধরা পড়ে। দেশে যেসব বহুতল ভবন নির্মিত হয় তার নির্মাণ উপকরণ কতটা মানসম্মত তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। ফলে ভূমিকম্প আতঙ্ক মানুষের মনে দানা বেঁধে ওঠা স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি প্রায় নেই বললেই চলে। উদ্ধার কাজ পরিচালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তির যেমন অভাব রয়েছে, তেমন অভাব প্রযুক্তিগত সুবিধার। ভূমিকম্প সম্পর্কে আতঙ্কে না ভুগে ঘরবাড়ি যাতে ভূমিকম্প সহনীয়ভাবে তৈরি করা হয় সে দিকে নজর দিতে হবে। দুর্যোগ-পরবর্তী কঠিন অবস্থা মোকাবিলার জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা অর্জনও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর