শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে নতুন মজুরি কাঠামো

দ্রব্যমূল্য ও বাসা ভাড়া নিয়ন্ত্রণেও নজর দিন

গার্মেন্ট শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ সর্বনিম্ন মজুরি বিদ্যমান মজুরির চেয়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা বেশি। শ্রমিক সংগঠনগুলো নতুন মজুরি কাঠামোকে অপর্যাপ্ত ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে। মালিকপক্ষ বলেছেন, নতুন মজুরি কাঠামোর ফলে অনেক গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। তারা অবশ্য স্বীকার করেছেন, শ্রমিকদেরও চলতে হবে। যে কারণে মজুরি ৫০ ভাগেরও বেশি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে তারা সম্মতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মজুরি বোর্ডের সঙ্গে শ্রম মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সর্বনিম্ন বেতন কাঠামোর ঘোষণা দেন। স্মর্তব্য, নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সঙ্গে মজুরি বোর্ডের চারটি বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে উভয় পক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান। দুই পক্ষের কথা শুনে তিনি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেন। এর আগের বৈঠকে মালিকপক্ষ ন্যূনতম মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা আর শ্রমিকপক্ষ ১২ হাজার ২০ টাকা করার দাবি করেন। শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর পরপর মজুরি কাঠামো পর্যালোচনা করতে হয়। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি কাঠামো পুনর্মূল্যায়ন করে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সে হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে পুনর্মূল্যায়ন করে মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর আগে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সরকার গঠিত মজুরি বোর্ডের পঞ্চম সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুই পক্ষই সর্বনিম্ন মজুরি ৮ হাজার টাকা করার পক্ষে সম্মত হন। নতুন মজুরি কাঠামোয় শ্রমিকদের মজুরি ৫০ ভাগের বেশি বৃদ্ধি করা হলেও গত পাঁচ বছরে দ্রব্যমূল্য, বাসা ভাড়াসহ দৈনন্দিন জীবন ধারণের খরচ যেভাবে বেড়েছে সে বিবেচনায় তা খুব বেশি কিছু নয়। কিন্তু তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে পোশাকশিল্পের টিকে থাকার স্বার্থে দুই পক্ষ ছাড় দিয়ে সমাধানে পৌঁছতে সক্ষম হওয়ার বিষয়টি অভিনন্দনযোগ্য। আমরা আশা করব, নতুন মজুরি কাঠামো শ্রমিকদের জীবনমান কিছুটা হলেও উন্নত করবে। মজুরি বৃদ্ধির সুফল নিশ্চিত করতে দ্রব্যমূল্য ও বাসা ভাড়া নিয়ন্ত্রণে সরকার চোখ-কান খোলা রাখবে- এমনটিও প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর