বিটুমিনের বদলে কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কয়েক বছর আগে প্রথম এ ব্যাপারে তাগিদ আসে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি টেকসই সড়ক নির্মাণে বিটুমিনের বদলে কংক্রিট ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সড়ক নির্মাণে কংক্রিটের ব্যবহার ব্যয়বহুল হলেও বাংলাদেশের বিচারে এটি সার্বিক বিবেচনায় সাশ্রয়ী। কারণ পৃথিবীর যেসব দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। নদী-নালার দেশ বাংলাদেশে বন্যাও একটি সাংবাৎসরিক ঘটনা। ভারি বৃষ্টিপাতে যেমন রাস্তাঘাট ডুবে যায় তেমন বন্যায়ও প্লøাবিত হয় জনপদের পাশাপাশি রাস্তাঘাটও। বিটুমিনের প্রধান শত্র“ পানি। বর্ষায় বিটুমিনে নির্মিত কোনো রাস্তা ডুবে গেলে তার অবস্থা হতশ্রী হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে সড়ক ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। কোনো সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বিটুমিনের বদলে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণে তৎক্ষণাৎ খরচ বেশি হলেও প্রতি বছর এক বা একাধিকবার তা সংস্কারে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালার প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়টি মনে রেখেই রাজধানীর শেরেবাংলানগরে ‘বাংলাদেশে মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিটুমিনের বদলে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন মন্ত্রী। বলেছেন, পানি বিটুমিনের শত্র“। পানির সঙ্গেই আমাদের সব সময় বসবাস। আমাদের ২০ বছর মেয়াদি কংক্রিট সড়ক নির্মাণ করতে হবে। প্রথম ১০ বছর কংক্রিট সড়কে হাতই দিতে হবে না। কংক্রিটের রাস্তায় খরচ বেশি পড়তে পারে কিন্তু টেকসই হিসেবে সেই খরচ বিটুমিনের চেয়ে অনেক কম হবে এবং মানুষের জীবনে শান্তি ফিরে আসবে। দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার গ্লানিতে ভুগতে হচ্ছে বিটুমিন ব্যবহারের কারণে। এই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে কংক্রিটের সড়ক নির্মাণের দিকে পা বাড়াতে হবে। পরিকল্পিতভাবে এ পথে যেতে হবে। টেকসই সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা সংস্থার সেবা দেওয়ার অজুহাতে কথায় কথায় সড়ক কাটার সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসা জরুরি।