মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম আর ওর মহাবিদায়

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম আর ওর মহাবিদায়

মনটা খুবই ভারাক্রান্ত। কেন যেন বার বার ‘আর ও’ সাহেবের কথা মনে পড়ছে। যাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলাম একে একে তারা প্রায় সবাই চলে যাচ্ছে। শুরুর দিকের আর কাউকে এখন ডানে-বাঁয়ে খুঁজে পাই না। একেবারে হতাশ, দিশাহারা অবস্থায় কস্তরীপাড়ার মনিরুল ইসলাম আমার ছাতিহাটির বাড়িতে এসেছিল। তার আগে সাটিয়াচরায় ও কালিহাতীতে যুদ্ধ হয়েছিল। দিশাহারা অস্ত্রহীন সারা পাহাড়-ভর-চর উল্কার মতো ছুটে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি কী করব, কোথায় যাব, কী করা উচিত। এরকম অবস্থায় বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী ছাড়া পরিবারের সবাই তখন ছাতিহাটি গ্রামে। কীভাবে ঘুমিয়ে ছিলাম এতদিন পর মনে নেই। তবে ঘুম থেকে জাগতেই ছোটখাটো এক কর্মী সিলেটের ফারুক এক আগন্তুকের খবর নিয়ে বাহিরবাড়ি থেকে ভিতরবাড়ি আসে। বাইরে গিয়ে দেখি শ্যামলা এক সুঠাম যুবক। সামনে যেতেই মিলিটারি কায়দায় সটার্ন স্যালুট করেছিল। কোলাকুলি করতে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বুঝেছিলাম তার মাজায় বাঁধা হাতবোমা। আমি বসতেই সে গ্রেনেডটি বের করে আমার সামনে রেখেছিল। এর পরের ইতিহাস অনেক লম্বা। তার প্রথম কথা ‘লতিফ ভাই আমাদের নেতা। তার অবর্তমানে আপনিই আমাদের নেতা। আর কিছু পারি বা না পারি, চারদিকে যে চোর-ডাকাত-লুটেরা লুটতরাজ করছে তা বন্ধ করতে পারলেও অনেক কাজের কাজ হবে।’ অনেক কথার পর তার সঙ্গে গিয়েছিলাম কালিহাতীর কুমারপাড়ায়। যেখানে কালিহাতী যুদ্ধে আমাদের পক্ষের ইপিআররা কুমারপাড়ার চাড়ির নিচে কিছু অস্ত্র রেখে গিয়েছিল। সে খবর ছিল মনিরুল ইসলামের কাছে। আমার কাছেও কালিহাতী পুলের উত্তরে কিছু অস্ত্র ফেলে যাওয়ার খবর ছিল। মনিরকে নিয়ে সেই অস্ত্রই উদ্ধারে বেরিয়েছিলাম। দিন তারিখ মনে নেই। মে মাসের ১-২ তারিখ হবে। যাওয়ার পথে ভাবনদত্তের কাছে বিখ্যাত নাট্যকার মামুনুর রশীদ, মোয়াজ্জেম হোসেন খানসহ চারজনকে পেয়েছিলাম। ছাতিহাটি থেকে বেরিয়েছিলাম তিনজন। যাওয়ার পথে কস্তুরীপাড়ায় পেয়েছিলাম শামসুকে। আমরা সেদিন নির্বিঘেœ কালিহাতীর কুমারপাড়া থেকে একটা এলএমজি, চারটা রাইফেলসহ ১৬-১৭টা গ্রেনেড ও অন্যান্য অস্ত্র গোলাবারুদ পেয়েছিলাম। অস্ত্র আনতে গিয়ে বিলের মধ্যে নাক উঁচু করে কোনোক্রমে পার হওয়া গিয়েছিল। কিন্তু অস্ত্রের বোঝা মাথায় আমরা উঁচা-লম্বারা পার হতে পারলেও ছোটখাটো ফারুকসহ আরও কয়েকজনের হয়েছিল মরণদশা। তবু পেরিয়েছিলাম। পরের রাত মরিচাতে ক্যাম্প করেছিলাম। ১০ জনের ক্যাম্প। আমি, মনিরুল ইসলাম, শামসু, ফারুক, সাইদুর, সাত্তার আরও যেন কে কে। মামুনুর রশীদ, মোয়াজ্জেম হোসেন খান, ছাত্র ইউনিয়নের শাজাহান ও আরও একজন ভাবনদত্ত থেকে যেমন অস্ত্র উদ্ধারে সাথী হয়েছিল, অস্ত্র উদ্ধার করে ঠিক তেমনি ভাবনদত্তেই তারা থেকে গিয়েছিল। মরিচা শিবিরে এক ফরেস্ট গার্ড হাবলার সোহরাব ওই রাতে আমাদের রান্না করে খাইয়েছিল। পরদিন সংগ্রামপুরের পাতার ক্যাম্প দখল। সে এক অভাবনীয় অভিযান। আমাদের সংখ্যা ১০, অস্ত্র চালাতে জানতাম আমি আর মনিরুল ইসলাম। তিন দলে ভাগ হয়ে পাতার ক্যাম্প দখল নিয়েছিলাম। যত চেষ্টাই করি কোনোমতেই একদলে একজনও গুলি চালাবার মতো ছিল না। সেজন্য তাদের সংখ্যা ভারী করেছিলাম। আমরা দুই দলে তিন-তিন ছয়, যারা গুলি ছুড়তে জানে না তারা চারজন। যে কোনো কারণেই হোক আল্লাহর দয়ায় সংগ্রামপুর পাতার ক্যাম্প অভিযানে আমরা জয়ী হয়েছিলাম। সেখান থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার সখীপুর পাইলট স্কুল। সেখানে পেয়েছিলাম আবু হানিফ, নুরে আজম ও খোরশেদ আলম আর ওকে। সংগ্রামপুর থেকে সখীপুরের পথে যুক্ত হয়েছিল শওকত মোমেন শাজাহান, মোতালেব গুর খা ও আমজাদ মাস্টার। উঠেছিলাম পাইলট স্কুলের ভাঙা টিনের ঘরে। সখীপুর পাইলট স্কুলে গিয়ে কালমেঘায় দূত পাঠিয়েছিলাম পিলখানা থেকে দলছুট ইপিআরদের সন্ধানে। কিন্তু তারা এক দিন আগেই কালমেঘা থেকে চলে গিয়েছিল। তাদের যে কত খুঁজেছিলাম তা বলে-কয়ে শেষ করা যাবে না। ইপিআররা ডাকাতিয়া আঙ্গারগাড়ার দিকে গেছে। পরদিন সেদিকেই যাব। আমরা ছিলাম ১০ জন। মনে হয় আরও আট-নয় জন সখীপুরে সঙ্গী হয়েছিল। তার মধ্যে তিন-চার জন সে রাত থেকে আমাদের সঙ্গে ছিল। খোরশেদ আলম আর ও গভীর রাতে বাড়ি গিয়েছিল কথা ছিল সে সকালে চলে আসবে। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সত্যিই সে সাড়ে ৫টা-৬টার মধ্যে এসেছিল। ৭টায় আমরা আড়াইপাড়া-ডাকাতিয়া-আঙ্গারগাড়ার পথে বেরোতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। মনে হয় ১১টা-সাড়ে ১১টার দিকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আঙ্গারগাড়ার দিকে কচুয়ার পথ ধরেছিলাম। কচুয়ায় আমাদের সঙ্গে হামিদুল হক বীরপ্রতীকের দেখা। তারপর কত জায়গায় যে ঘুরেছি প্রায় রাত পোহানোর আগ পর্যন্ত মল্লিকবাড়ী, কাওরাইদ আরও কতখানে। এখন গাড়ি নিয়ে ঘুরতেও হয়রান লাগে। কিন্তু তখন কী করে যে ঘুরেছিলাম বলতে পারব না। তবে সারা রাত ছোটাছুটি করে সকালে মালেক, সাবদুল, আবদুর রাজ্জাক সিদ্দিকী আরও একজনের সহায়তায় ইপিআরদের ফেলে যাওয়া বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করে ধুমখালীর সালাম ফকিরের সহায়তায় লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। এসব কিছুতে মহান বিরল চরিত্রের অধিকারী খোরশেদ আলম আর ও ছিলেন সবার আগে। কাহারতার সাবেদ আলীর ছেলে খোরশেদ আলম। খোরশেদ আলম তার বাপ-দাদার দেওয়া নাম। স্বাধীনতার পর খোরশেদ আলম নামে তাকে কেউ চিনত না, ‘আর ও’ নামে যত মানুষ তাকে চিনত। আর ও মানে রিক্রুটিং অফিসার। কাদেরিয়া বাহিনীর চার ভাগের এক ভাগ যোদ্ধার রিক্রুট করেছেন এই খোরশেদ আলম আর ও। যুদ্ধের সময় আমি পাহাড়ের যত জায়গায় গেছি খোরশেদ আলম সেসব জায়গায় আমার আগে গেছে ১০ বার। ভদ্রলোক নানা কিছু করতেন। তার মধ্যে ফইটা শিকার ছিল তার খুবই প্রিয়। ছোট খরগোশের মতো এক আজব প্রাণী। পায়ে চলার রাস্তার দুই পাশে লতাপাতা, খড়কুটো রেখে দিলে কোনোমতেই সে খড়কুটো টপকে ডানে-বাঁয়ে জঙ্গলে যেত না, সোজা রাস্তা দিয়ে যেত। রাস্তায় খড়কুটো ফেলে রাখলে সেখানে গিয়ে বসে পড়ত। একটু সুতা বাঁধা থাকলে সে সুতা টপকেও যেত না। তাই ফইটা শিকারিরা জঙ্গলে গিয়ে খুঁজে পেতে ফইটাকে আগে রাস্তায় আনত, তারপর ফইটা চলত আগে আগে শিকারি পিছে পিছে। জঙ্গলে এদিক-ওদিক যাওয়ার চেষ্টা করে ডালপালা দেখে কোনোক্রমেই আর ডানে-বাঁয়ে যেত না। সামনে চলতে চলতে এক জায়গায় পথ বন্ধ দেখে বসে পড়ে শিকারির হাতে ধরা পড়ত। ফইটা ধরা ছিল খোরশেদ আলমের সব থেকে প্রিয় কাজ। খুব কম রাত ছিল যে রাতে খোরশেদ আলম ফইটা শিকার করেননি। স্বাধীনতার পর লোকটি আমার ছায়াসঙ্গী হয়েছিলেন। আমি অমন চৌকস মানুষ খুব একটা দেখিনি। তাকে যখন যে কাজ দিয়েছি সামান্য বুঝিয়ে দিলে আমার চাহিদার চাইতেও ভালো করে যে কোনো কাজ করতে পারতেন। ভালো লেখাপড়াও জানতেন। পাতা পাতুরী দিয়ে বিস্ফোরক বানাতে পারতেন। টু টু বোরের গুলি ফুরিয়ে গেলে খালি খোসা দিয়ে দিব্বি কার্তুজ বানিয়ে ফেলতেন। তাতে ভালো ফলও পাওয়া যেত। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামে খোরশেদ আলম শরিক হয়েছিলেন। তিনি সে সময় না থাকলে আমাদের অনেক অস্ত্র অকেজো পড়ে থাকত। কোনোটার সেপটি কেস নষ্ট, কোনোটার ম্যাগজিন, কোনোটার বোল্ট নষ্ট। সবকিছু নিমিষে ঠিক করে ফেলতেন। মনে হতো এসবের জন্যই যেন তার জম্ম । ২৫-৩০ জন কর্মী বানিয়েছিলেন যারা ছিল তার মতোই পারদর্শী।

’৭৭-এ ভারতের জাতীয় নির্বাচনে প্রথম কংগ্রেস পরাজিত হয়। সর্বোদয় নেতা শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে ভারতে এক বিপ্লব ঘটে যায়। বিরোধীরা সব একাট্টা হয়ে জনতা পার্টি গঠন করে নির্বাচনে অবতীর্ণ হন। স্বাধীনতার পর কংগ্রেস মাত্র ১৪৩ সিট পেয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়। প্রধানমন্ত্রী হন শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর জানি দুশমন মোরারজি দেশাই। বাংলাদেশে ‘হ্যাঁ-না’ ভোটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আমাদের কপাল পোড়ে। মোরারজি দেশাই আমাদের জিয়াউর রহমানের হাতে তুলে দিতে রাজি হন। সেইমতো প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধসংগ্রামীকে ভারত জিয়াউর রহমানের হাতে তুলে দেয়। যার মধ্যে এক শ কয়েকজনকে হালুয়াঘাট থেকে নুরুন্দীর পথে নানাভাবে হত্যা করে। বাকিদের নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। তার মধ্যে দুই শর মতো ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে ডিজিএফআইর টর্চার সেলে। সেখানে চট্টগ্রামের মৌলভি সৈয়দ নির্মম নির্যাতনে মারা যায়। সে খবর আমাদের কাছে পৌঁছলে দিল্লিতে খুবই তোলপাড় হয়। ইটনার ভূপেশ গুপ্ত, সমর গুহ, মধু লিমাইয়া, জর্জ ফার্নান্ডেজ, সুরেন্দ্র মোহনসহ প্রায় ৪০ জন এমপি লোকসভায় ঝড় তোলেন। তার পরও ডিজিএফআইর অত্যাচার বন্ধ হয়নি। নেত্রকোনার এক কর্মী জজ মিয়া। তার মতো চালাক চতুর এবং অন্যকে বোকা বানাতে ওস্তাদ আমি খুব কমই দেখেছি। একদিন ডিজিএফআইর এক মেজর জজ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে বলে, ‘স্যার, আমি স্যার কিছু জানি না। কিন্তু আমাদের এক আর ও সাহেব আছেন। যাকে এক টুকরা লোহা দিলে রিভলবার বানাতে পারে।’ একটু পরে ডাক পড়ে খোরশেদ আলম আর ও সাহেবের। মেজর যেই জিজ্ঞাসা করে, ‘জজ মিয়া বলে গেল আপনি নাকি এক টুকরা লোহা পেলে রিভলবার বানাতে পারেন।’ সঙ্গে সঙ্গে আর ও সাহেবের জবাব, ‘স্যার, ওই বাচালের কথা আপনি বিশ্বাস করেছেন। কাদের সিদ্দিকী থাকলে এক টুকরা লোহা দিয়ে রিভলবার কেন, কামান বানাতে পারি। সত্য কথা বলতে কি আমরা কেউ কিছু না। কাদের সিদ্দিকী থাকলে আমরা সিংহ। কাদের সিদ্দিকী না থাকলে আমরা লেজ কাটা শেয়ালের চাইতেও অধম।’ কী বুঝেছিল মেজর তা সে-ই জানে। খোরশেদ আলম আর ওকে আর একটি কথাও জিজ্ঞাসা করেনি। এরপর ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসাবাদ একেবারেই কমে গিয়েছিল। খোরশেদ আলমের তীক্ষœ বুদ্ধ আর বিশ্বস্ততা ছিল অসাধারণ। যারা না হলে আমি মুক্তিযুদ্ধে কিছুই করতে পারতাম না, খোরশেদ আলম আর ও তার একজন। হঠাৎই তার মৃত্যু আমার বুকের পাঁজর ভেঙে দিয়েছে। দেখছি আস্তে আস্তে সবাই চলে যাচ্ছে। সেই কবে কস্তুরীপাড়ার মনিরুল ইসলাম চলে গেছে। শামসু ছিল সবার ছোট, সেও ১০-১২ বছর আগে কীভাবে যেন মারা যায়। হামিদুল হক বীরপ্রতীক, শওকত মোমেন শাজাহান প্রথম দিককার প্রায় সবাই চলে গেছে। কয়েক মাস আগে হামিদুল হকের স্মরণসভায় যোগ দিতে গিয়ে খোরশেদ আলম আর ওকে দেখতে গিয়েছিলাম। কথাবার্তা আগের মতো সাবলীল ছিল। কিন্তু বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না, ধরে ওঠাতে হতো। সেই যে শেষ দেখা হবে কখনো ভাবিনি। অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন খোরশেদ আলম আর ও। আর্থিকভাবে এগোতে পারেননি। আগে যা ছিল তার চেয়েও আর্থিক অবস্থা মন্দ ছিল। যেদিন তাকে প্রথম পেয়েছিলাম সেদিন তিনি দর্জির কাজ করতেন। সংসার বেশ ভালোই চলত। স্বাধীনতার পর সংসার খুব খারাপ না হলেও এরকম একজন নামকরা মুক্তিযোদ্ধার যেরকম হওয়ার কথা তার কানাকড়িও ছিল না। ফরিদপুরের এক নিঃসম্বল সখীপুরে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সরকারি যত গম তার বারো আনাই খলিলের মাধ্যমে বিক্রি হতো। শুধু খলিল বললে অনেকেই তাকে চেনে না। ময়দা খলিল বললে সখীপুরের প্রায় সবাই চেনে। অত সুন্দর ঘরবাড়ি করেছে জানতাম না। সেদিন গিয়ে খলিলের ঘরবাড়ি দেখে বেশ ভালো লেগেছে। সেদিন সকালে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। সোহেল সামনে দিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। মুখের চেহারা ভালো ছিল না। কয়েকবার এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করে হঠাৎ করে বলল, ‘গত রাতে আর ও সাহেব মারা গেছেন।’ খোরশেদ আলম আর ও মারা যাবেন জানতাম। কিন্তু খবরটা সেদিন শুনব ভাবিনি। একজন নিকট সহকর্মী চলে গেলে যেমন লাগে খোরশেদ আলমের চলে যাওয়ায় তেমনি লেগেছে। বরং একটু বেশিই লেগেছে। কারণ লোকটি বড় কর্মঠ ছিল। আপদে-বিপদে সব সময় ছায়ার মতো ছিল। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর আমার চরম দুর্দিনেও তিনি আমার সঙ্গ ছাড়েননি। এমন ছায়াসঙ্গী হারালে কার না খারাপ লাগে। আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন খোরশেদ আলম আর ওকে জান্নাত দান করেন।

                লেখক : রাজনীতিক


www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর