মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

গণমাধ্যমের আপত্তি আমলে নিন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের সঙ্গে গণমাধ্যমের যে অনাকাক্সিক্ষত দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে দৃশ্যত সঠিক পথেই এগোচ্ছে সরকার। সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সরকারের তিন মন্ত্রী বলেছেন এ আইন সম্পর্কে গণমাধ্যমের যে আপত্তি রয়েছে তা মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভার আলোচনার পর এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসা হবে। গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একই মুদ্রার দুই পিঠ। এর একদিকে ছাড়া অন্যটি কল্পনা করাও অসম্ভব। গণতান্ত্রিক দেশে গণমাধ্যমকে ফোর্থ স্টেটের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা সে মর্যাদায় ব্যত্যয় ঘটানোর আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তায় আইন প্রণয়নে গণমাধ্যমের কোনো আপত্তি নেই। তবে সে আইনে উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় আঘাত হানার সুযোগ থাকলে তাতে আশঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের যে মধুচন্দ্রিমার সম্পর্ক বিরাজ করছে তাতে আঘাত হেনেছে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এ আইনের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সরকারের টনক নড়ে এবং সে পরিপ্রেক্ষিতে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর দীর্ঘ বৈঠক হয়। গণমাধ্যমের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক জিইয়ে রাখতে আইনের ত্র“টিগুলো দূর করার যে সদিচ্ছা সরকারের পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করব মন্ত্রিসভার বৈঠকে গণমাধ্যমের আপত্তিগুলো আমলে নেওয়া হবে এবং তা সংশোধনের মাধ্যমে সুবুদ্ধির পরিচয় দেওয়া হবে। আজকের বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের ফসল। গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ করার জন্য এ দেশের মানুষ স্বাধিকার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন শুধু গণমাধ্যম নয়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দাবিদার সরকারের জন্যও গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়। আমরা আশা করব সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্ষেত্রে অংশীজনদের আপত্তিগুলো আমলে নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংঘাতের বদলে আস্থার সম্পর্ক অটুট করার উদ্যোগ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর