মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সন্ত্রাসের জনপদ ময়মনসিংহ

ওদের সামাল দিন

ময়মনসিংহ যেভাবে সন্ত্রাসীদের মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। হাত বাড়ালেই এ জেলায় অবৈধ অস্ত্র মিলছে। অস্ত্রবাজদের পেছনে রাজনৈতিক প্রশ্রয় থাকায় তারা দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। গডফাদারদের স্বার্থে টান পড়লেই প্রকাশ্যে ঘটছে খুন-খারাবির ঘটনা। লাশ কেটে কলিজা ও ফুসফুস গডফাদারকে উপহার দেওয়ার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে ময়মনসিংহের অস্ত্রবাজরা। রাজনৈতিক মদদে এ জেলায় যেভাবে একের পর এক সন্ত্রাসী গ্রুপের আত্মপ্রকাশ ঘটছে তা আইনশৃঙ্খলার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। প্রশাসনকে সম্মোহিত করে অপরাধীরা প্রকাশ্যে আইনবিরোধী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বেপরোয়া আচরণ শুধু আইনশৃঙ্খলার জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে না, সরকারের সুনামের জন্যও সংকট সৃষ্টি করছে। কারণ সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসেবে এমন লোকজনও রয়েছেন যারা সরকারি ঘরানার লোক। দলে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলারও ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। এ অশুভ চক্রের হাতে নিহত হয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আশফাক আল রাফী শাওন (২৮)। ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত গভীর রাতে নগরের মৃত্যুঞ্জয়ী স্কুল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ১১ দিন পর তিনি মারা যান। ৩১ জুলাই আকুয়া এলাকায় প্রকাশ্যে হত্যা করা হয় ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের সদস্য আজাদ শেখকে (৩৩)। প্রথমে দুই রাউন্ড গুলি ও পরে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যার পর সন্ত্রাসীরা তার দেহ থেকে কলিজা ও ফুসফুস বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে সেই কলিজা আর ফুসফুস তাদের গডফাদারকে উপহার দিয়ে আসে খুনিরা। স্মর্তব্য, সন্ত্রাসীদের গডফাদার এর আগে হুমকি দেয় আজাদ আমার মহল্লায় বাস করে অন্য গ্রুপের রাজনীতি করে কোন সাহসে! তার কলিজাটা কত বড় তা নিজ চোখে দেখার আকাক্সক্ষা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ময়মনসিংহের অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের গ্রহণযোগ্যতায় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। জনমনে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হলে সন্ত্রাসের হোতাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠিন হতে হবে। গডফাদারদের পরিচয় যাই হোক, যত ক্ষমতাধরের পুত্র হোক তাদের সামাল দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। 

সর্বশেষ খবর